বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

হাসপাতাল-ক্লিনিক ঘুরে রাস্তায় সন্তান প্রসব

বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা না পেয়ে রাতে রাস্তায় সন্তান প্রসব করলেন একজন দরিদ্র মা। বরগুনা পুলিশের ব্যবস্থাপনায় সন্তান প্রসবের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য মা ও নবজাতক শিশুকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি এলাকার দরিদ্র রিকশাচালক ইব্রাহিমের স্ত্রী লিমা আক্তার প্রসব বেদনা  নিয়ে বুধবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। রাত ১০টার দিকে প্রসব যন্ত্রণা বেশি হলে কর্তব্যরত সিস্টাররা স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করে দেখতে পান শিশুর মাথা এসে আটকে আছে, যা সিজার ব্যতীত প্রসব করানো সম্ভব নয়। হাসপাতাল থেকে রিকশাযোগে রাত ১০টার দিকে প্রসূতির মা লিমা আক্তারকে বেসরকারি ক্লিনিক আল-রাজীতে নিয়ে এলে সেখানে সিজারের ওপারেশন থিয়েটার (ওটি) প্রস্তুত না থাকায় তারা ওই মুহূর্তে জরুরি সিজার সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়। বরগুনা জেলা যুবলীগের একজন কর্মী আবু হানিফ দোলন ক্লিনিকের সামনে কান্নাকাটি শুনতে পেয়ে এগিয়ে যান। একাধিক বেসরকারি ক্লিনিকের সঙ্গে কথা বলেও প্রসূতি লিমা আক্তারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে সেবা ক্লিনিক থেকে অন্য একটি ক্লিনিকে নেওয়ার সময় রাস্তায়ই সন্তান প্রসব করেন লিমা। বরগুনার জেলা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে রাতেই মা ও নবজাতককে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব উদ্দীন খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বুধবার দুপুরে লিমা আক্তার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা ঠিকভাবে দেওয়া হয়। রাতে সিজারের কোনো ব্যবস্থা হাসপাতালে নেই, দিনে হলে সমস্যা ছিল না। একটি সিজারের সঙ্গে কয়েকজন জড়িত থাকেন। রোগীর আত্মীয়স্বজন লিখিত দিয়েই হাসপাতাল থেকে বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যান। বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হোসনেয়ারা হাসি বলেন, রাস্তায় একজন মায়ের সন্তান প্রসবের ঘটনা আমাদের জন্য দুঃখ এবং লজ্জার বিষয়। বরগুনার সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থার দুর্বল দিক এতে প্রমাণিত হলো।

 

 

সর্বশেষ খবর