শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই সন্তানকে নিয়ে মা লড়ছেন হাসপাতালে

যুক্তরাজ্য প্রবাসী পিতা পুত্রের দাফন সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটের ওসমানীনগরে মারা যাওয়া যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাবা-ছেলের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের আইসিইউতে এখনো ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে অসুস্থতার সঙ্গে লড়ছেন মা। বাসার ভিতর যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারের সব সদস্য অচেতন হওয়া এবং দুজনের মৃত্যুর রহস্য গতকাল পর্যন্ত উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর স্কুল রোডের ভাড়া বাসায় ‘রহস্যজনকভাবে’ মারা যাওয়া যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মাইকুল ইসলামের জানাজা গতকাল বেলা ২টার দিকে দয়ামীর পারকুল মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলুসহ এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন। পরে ধিরারাই খাতুপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের লাশ দাফন করা হয়। প্রবাসী বাবা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসমানীনগর থানার ওসি এস এম মাঈন উদ্দীন।

এদিকে ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন মারা যাওয়া যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম, ছেলে সাদিকুল ইসলাম ও মেয়ে সামিরা ইসলাম এখনো অসুস্থতার সঙ্গে লড়ছেন। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল গাফ্ফার জানান, মা ও ছেলের জ্ঞান ফিরেছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। তবে এখনো শঙ্কামুক্ত নন মেয়ে সামিরা।

ঘটনার তিন দিন পার হলেও এখনো কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পর বাসায় থাকা কয়েকজন স্বজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারটির পাঁচ সদস্য একসঙ্গে অচেতন হয়ে পড়া এবং দুজনের মৃত্যুর কোনো কারণ শনাক্ত করতে পারেনি। তাই মারা যাওয়া দুজনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও অসুস্থদের সুস্থতার অপেক্ষায় আছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে। আর অসুস্থরা সুস্থ হলে জানা যাবে সেদিন বাসায় কী ঘটেছিল। এরপর সব তথ্য-উপাত্ত মিলিয়ে ঘটনার রহস্য ভেদ করা যাবে।

প্রসঙ্গত, ১২ জুলাই রফিকুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন। এরপর ঢাকায় এক সপ্তাহ থেকে ১৮ জুলাই তাজপুর স্কুল রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। সোমবার রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে বাসার একটি কক্ষে রফিকুল এবং অপর দুটি কক্ষে শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী ও শ্যালকের মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে বাসার অন্যান্য কক্ষে থাকা আত্মীয়রা ডাকাডাকি করে রফিকুলদের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন দেন। খবর পেয়ে বেলা ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানার পুলিশের একটি দল গিয়ে দরজা ভেঙে অচেতন অবস্থায় পাঁচ যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রফিকুল ইসলাম ও মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাকি তিনজনকে হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

সর্বশেষ খবর