সোমবার, ১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ছেলের ক্যাম্পাসে এসে অঝোরে কাঁদলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

ছেলের ক্যাম্পাসে এসে অঝোরে কাঁদলেন

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার ছয় দিন পর ছেলের স্বপ্নের ক্যাম্পাসে এসে অঝোরে কাঁদলেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থী বুলবুল আহমদের মা ইয়াসমিন আক্তার, চাইলেন ছেলে হত্যার বিচার।

গতকাল শাবি ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বুলবুলের বড় ভাই মো. জাকারিয়া, বড় বোন সোহাগী আক্তার ও কানিজ ফাতেমা, মামা কামাল আহমদসহ পরিবারের নয় সদস্য।

পরে বুলবুলের ল্যাপটপসহ ব্যবহৃত জিনিসপত্র তার স্বজনদের হাতে তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে বুলবুলের মা শাবির শাহপরান হলে যান। বুলবুল ওই হলের বি ব্লকের ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

বুলবুলের বড় ভাই জাকারিয়া বলেন, আমরা ভীষণভাবে ব্যথিত। মাকে বুলবুলের কক্ষে নিয়ে যাইনি। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানেও নিয়ে যাইনি। কারণ মা সইতে পারবেন না।’ ক্যাম্পাসে মায়ের উপস্থিতি প্রসঙ্গে জাকারিয়া বলেন, ‘মাকে আমরা আটকে রাখতে পারছিলাম না। বুলবুল যেখানে থাকত তিনি সেখানে আসতে চাচ্ছিলেন। সে খুব আদরের ছিল। আট মাস আগে বাবা মারা যান। এ অবস্থায় অনেক কষ্ট করে তাকে পড়ালেখা করাচ্ছিলাম। বুলবুলের পড়ালেখার খরচ জোগানোর জন্য আমার বোন বিয়ে পর্যন্ত করেনি।

শাহপরান হল প্রভোস্ট কার্যালয়ে বসে মা ইয়াসমিন আক্তার অঝোরে কাঁদছিলেন। ছেলে হত্যার সুবিচার চেয়ে বলেন, ‘আমার পুত আর পাইতাম না গো। আমার পুত আমায় মা ডাকে না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই। যদি আমার পুত ঝালমুড়িও বেচত তাইলি কি মারা যেত?’ বুলবুলের শোকাহত বোন সোহাগী আক্তার বলেন, ‘যারা এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে তারা রাজমিস্ত্রি। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে খুন করে ফেলবে এটা হতে পারে না। তার আঘাত দেখে মনে হয়েছে তার ওপর কারও ক্ষোভ ছিল। এমনও হতে পারে কেউ ওদের টাকা দিয়ে খুন করিয়েছে।’ বড় ভাই জাকারিয়া আরও বলেন, ‘বুলবুল হত্যার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ওই মেয়ে। আমি বুঝতেছি না মেয়েটিকে কেন আড়াল করা হচ্ছে।’ শাহপরান হল থেকে বুলবুলের পরিবারকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ছাত্রকল্যাণ উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক আমিনা পারভীন বলেন, ‘বুলবুলের পরিবারকে আমরা আশ্বাস দিয়েছি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। আমরা চাই এর একটি সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং সুবিচার হোক।’ শাহপরান হলের প্রভোস্ট ড. মিজানুর রহমান বলেন, বুলবুলের পরিবারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তার ল্যাপটপ, বই-খাতা, লেপ, তোশক, বালিশসহ ব্যবহৃত জিনিস পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুলাই শাবি ক্যাম্পাসের গাজী কালুর টিলায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন শিক্ষার্থী বুলবুল।

সর্বশেষ খবর