মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সারা দেশে খুনোখুনি

গাংনীতে প্রেমিকের খাওয়ানো হারপিকে প্রাণ গেল প্রেমিকার

মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সহড়াতলায় প্রেমিক সেলিম রেজা স্বাধীন (১৭)-এর খাওয়ানো হারপিকে প্রাণ গেল নবম শ্রেণির স্কুলছাত্রী সুম্মা খাতুনের। সুম্মা গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের রেজাউল হকের কন্যা ও হাড়াভাঙ্গা এইসএসকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

দীর্ঘ দুই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর অবশেষে ঢাকা শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে মৃত্যু হয় সুম্মার। এদিন সন্ধ্যার দিকে মরদেহ গ্রামে এসে পৌঁছায়। সুম্মার মৃতু্যুতে পরিবার ও গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।

এদিকে অসুস্থ থাকাকালীন সুম্মা খাতুন এক ভিডিও বার্তায় জানান, সেদিন আমাদের বাড়িতে কেউ ছিল না। আমি একা ছিলাম। আমার প্রেমিক স্বাধীন আমাদের বাড়িতে এসে বলে পরিবার আমাদের মেনে নিচ্ছে না। আমরা দুজন একসঙ্গে আত্মহত্যা করব। এই বলে সে আমাকে জোর করে হারপিক খাওয়ায়। এর পর আমি জ্বালা যন্ত্রণায় চিৎকার দিলে স্বাধীন আমাকে ফেলে পালিয়ে যায়। আমি অনেক দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছি কিন্তু স্বাধীন আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেনি। আমি এর বিচার চাই। সুম্মার পরিবার জানান, একই গ্রামের সৌদি প্রবাসী সাইদুর রহমানের স্কুল পড়ুয়া ছেলে স্বাধীনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুম্মা খাতুনের। কয়েক মাস যেতে না যেতেই সম্পর্কের কথা উভয় পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়। কয়েকবার স্বাধীনের পরিবারকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সুম্মার পরিবার। বিয়ের বিষয়টি স্বাধীনের পরিবার মেনে নেয়নি। এরপর গত ২২ মে স্বাধীন সুম্মার বাড়ি যেয়ে সুম্মাকে জোর করে হারপিক পান করায়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে করমদি সন্ধানী হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা নিয়ে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে ঢাকা শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে রেফার করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। সুম্মার পিতা রেজাউল হক জানায়, আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য স্বাধীনই দায়ী। দীর্ঘদিন মেয়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে আমি পথের ফকির হয়ে গেছি। তবুও আমার মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলাম না। এ কথা বলতেই মূর্ছা যায় সুম্মার পিতা। এদিকে স্বাধীন ও তার পরিবারের লোকজন গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। এ কারণে স্বাধীনের পরিবারের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, সুম্মা খাতুনের বাবা রেজাউল হক সোমবার সকালে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আরও বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর