সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী বহিরাগত ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানিকারীদের গ্রেফতার দাবিতে তারা গতকাল বেলা ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ করে। পরে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে তারা অবরোধ স্থগিত করেছে। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন। জরুরি ও হৃদরোগ ছাড়া হাসপাতালের অন্য বিভাগে তারা সেবা প্রদান থেকে বিরত রয়েছেন। আজ সকাল ৮টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে না পারলে সব বিভাগের সেবা প্রদান বন্ধ করে হাসপাতাল অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গতকাল বেলা ১টার দিকে বিভিন্ন দাবিতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা হাসপাতালের সামনের সড়কে বসে স্লোগান দিতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর বিক্ষোভে অংশ নেন হাসপাতালের মিডলেভেল চিকিৎসক পরিষদের নেতারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে মিডলেভেল চিকিৎসকরাও আন্দোলনের ঘোষণা দেন। বেলা  পৌনে ২টার দিকে অবরোধস্থলে আসেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূইয়া। এ সময় আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেফতার করেছে ও বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা বৃদ্ধিসহ যেসব দাবি জানিয়েছেন সেগুলোও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান হাসপাতালের এই পরিচালক। তার আশ্বাস পেয়ে আন্দোলনকারীরা আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে অবরোধ স্থগিত করেন। তবে তারা কাজে ফেরেননি। এদিকে, সকাল ৮টার মধ্যে আসামিরা গ্রেফতার না হলে তারা সব বিভাগে সেবা প্রদান বন্ধ করে দিয়ে হাসপাতাল অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দেন তারা। এর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূইয়া জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘটের কারণে সেবা কার্যক্রমে কিছু ব্যাঘাত ঘটছে। তবে সার্বিক সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে, ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির অভিযোগে আটজনকে আসামি করে মঙ্গলবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা করা হয়। ওসমানী মেডিকেলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিএ-টু প্রিন্সিপাল ও সচিব মাহমুদুল রশিদ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। দুই মামলার আসামিরা হলেন- দিব্য, আবদুল্লাহ, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি। আসামিদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে নগরীর মুন্সিপাড়ার সাঈদ হাসান রাব্বি ও কাজলশাহ এলাকার এহসান আহমদকে সোমবার দিবাগত রাতে পুলিশ গ্রেফতার করে। রাব্বি সিলেট মহানগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।