বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

জবি ছাত্রীর মোবাইল বিক্রি করে মদ খায় ছিনতাইকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কারওয়ান বাজার সিগন্যালে যাত্রীবাহী বাস থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী পারিশা আক্তারের মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হলেন মো. রিপন ওরফে আকাশ, মো. শফিক ও অন্য এক কিশোর। পুলিশ বলছে, মোবাইলটি ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন আটক ব্যক্তিরা। পরে সেই টাকার মধ্যে ২ হাজার টাকা দিয়ে মদ খান তারা। আর বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন।

গতকাল রাজধানীর তেজগাঁও থানা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি রুবাইয়াত জামান।

তিনি বলেন, ২১ জুলাই মাস্টার্সের থিসিসের কাজ শেষে বাসযোগে বাসায় ফিরছিলেন জবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী পারিশা। সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের সামনে ট্রাফিক সিগন্যালে বাসটি থেমে যায়। এ সময় এক যুবক বাসের জানালা দিয়ে পারিশার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি টান দিয়ে নিয়ে যান। পারিশা দ্রুত বাস থেকে নেমে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে একজন সন্দেহভাজনকে ধরে ফেলেন। পারিশার সঙ্গে থাকা তার বন্ধুরা ঘটনাস্থল থেকে আরেকজন সন্দেহভাজনকে আটক করেন। পারিশা ও তার বন্ধুদের সেই সাহসী ভূমিকার বিষয়টি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। এ বিষয়ে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা হয়। ঘটনার পর ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও অপরাধীর বিষয়ে পারিশার মৌখিক বর্ণনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িত সন্দেহে এক কিশোরকে কারওয়ান বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে অস্বীকার করলেও পুলিশের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ঘটনার সঙ্গে নিজের ও রিপন নামে আরেকজনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ওই কিশোর।

এডিসি রুবাইয়াত জামান বলেন, ইতোমধ্যে রিপন অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে আদালতের মাধ্যমে দুদিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন। চুরি করা মোবাইল ফোনটি ৪ হাজার টাকায় কারওয়ান বাজারের চোরাই মোবাইল ক্রেতা শফিকের কাছে বিক্রি করেন রিপন। তার দেওয়া তথ্যমতে, কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে চোরাই মোবাইলসহ শফিককে গ্রেফতার করা হয়। রিপনের নামে বিভিন্ন থানায় ছয়টি, জড়িত কিশোরের বিরুদ্ধে চারটি এবং চোরাই মোবাইল ক্রেতা শফিকের নামে দুটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। আলোচিত এ ঘটনাটির তদন্ত কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে শেষ করে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তিনি বলেন, পারিশা ও তার বন্ধুরা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তবে এ ধরনের অপরাধীদের কাছে ছোটখাটো অস্ত্র থাকে। এতে ভিকটিমের আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে অপরাধীদের ওপর ঝাঁপিয়ে না পড়ে আইনের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর