শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

নদীপাড়ে আবারও আতঙ্ক

পানি বাড়ছে যমুনায়, ধরলা-তিস্তায় ভাঙন

প্রতিদিন ডেস্ক

নদীপাড়ে আবারও আতঙ্ক

পানি বৃদ্ধিতে কুড়িগ্রামে বাড়ছে নদী ভাঙন

বেশ কয়েকটি নদ-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এরই মধ্যে নিম্নাঞ্চল ডুবতে শুরু করেছে। ধরলা-তিস্তায় ভাঙনও দেখা দিয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

বগুড়া : বগুড়া সারিয়াকান্দিতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। ফলে নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা। জানা গেছে, গত ১ আগস্ট থেকে সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। সারিয়াকান্দি পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার পরশুরাম জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরেই যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনো বিপৎসীমার নিচেই রয়েছে। গত সোমবার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৫.১৫ মিটার, মঙ্গলবার পানির উচ্চতা ছিল ১৫.২৯ মিটার, বুধবার পানি ছিল ১৫.৬৯ মিটার এবং গতকাল উচ্চতা ছিল ১৫.৯৫ মিটার। যা বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে বাঙালি নদীতে সকালে পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৭১ মিটার। যা বিপৎসীমার ১ মিটার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপনির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহমান তাসকিয়া   জানান, পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করলেও বিপৎসীমা অতিক্রম করার কোনো সম্ভাবনা নেই। দুই-এক দিনের মধ্যে পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই মাসের শেষের দিনে পুনরায় বন্যা দেখা দিতে পারে।

কুড়িগ্রাম : কয়েকদিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি ক্রমেই বাড়ছে। এসব নদী তীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলের কোথাও কোথাও পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এখনো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলেও পানি বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ২৪ ঘণ্টায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে, তবে এখনো তা বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত বন্যার আশঙ্কা না থাকলেও নদ-নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এদিকে তিন দিন ধরে ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বেশি বাড়ায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিস্তা নদীর ঘড়িয়ালডাঙা, তৈয়ব খাঁ, দলদলিয়া ও ধরলা নদীর সদর উপজেলার যাত্রাপুর, ঘোগাদহ, হলোখানার চরশুভার কুটিসহ অন্তত ২৫টি পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবো ভাঙন প্রতিরোধে বালুর বস্তা ফেলে প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও তা কাজে আসছে না। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, এ মুুহূর্তে  নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলেও কয়েকটি পয়েন্টে নদী ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ : পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে গত পাঁচ দিন ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং কাজিপুর পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে কাজিপুর, সদর, বেলকুচি শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে শাকসবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আমন আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। বসতভিটায় পানি না উঠলেও চারপাশে পানি থইথই করছে।

নীলফামারী : নীলফামারীতে গতকাল বিকাল তিনটা থেকে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ফলে পানিবন্দি থাকা ১৫টি চরগ্রামের বসবাসরত পরিবারের বাড়ি ঘর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। এতে দুর্ভোগ কমলেও রয়েছে খাদ্য সংকট। পানি কমা অব্যাহত থাকলেও আগামী রবিবার আবারও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ  কেন্দ্র।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর