শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

টাকা পাচার অ্যাপসে

নিজস্ব প্রতিবেদক

টাকা পাচার অ্যাপসে

গত চার মাসে এক অ্যাপসেই হুন্ডি করে প্রায় ৫ কোটি টাকা দুবাইয়ে পাচার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। দুবাইয়ে অবস্থানরত সানজিদা ও আশিক দম্পতি এ হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে সংস্থাটি। বুধবার বরিশালে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- রনি খান, আরজু আক্তার ও তাসনিম রহমান। এ সময় তাদের থেকে ৪টি মোবাইল ফোন সেট, ৩টি বিকাশ এবং ‘নগদ’ এজেন্ট সিম, বিভিন্ন ব্যাংকের কয়েকটি চেক বই ও নগদ ১ লাখ ২৮ হাজার ৬৩০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম। তিনি বলেন, গ্রেফতার ওই তিনজন সিলেজ সাইট নামে একটি অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট ব্যবসা চালু করেন ফেব্রুয়ারিতে। সেখানে সাধারণ মানুষকে বেশি আয়ের লোভ দেখিয়ে প্রলুব্ধ করত। প্রথম দিকে ছোট অঙ্কের ইনভেস্টমেন্টের কিছু মুনাফা দিয়ে তারা মানুষকে আকৃষ্ট করত। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ বেশি টাকা সিলেজ সাইটে বিনিয়োগ করে। গ্রাহকের টাকা ডিপোজিট হওয়ার পর ২২ জুলাই সিলেজ সাইট নামে ওয়েবসাইটটি ডিজঅ্যাবল করে দেয় চক্রটি। এ ছাড়া তাদের কথিত অফিসে তালা লাগিয়ে গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চক্রটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছিল। এজেন্টদের থেকে সাধারণ মানুষের টাকা তারা ‘নগদ’, ‘বিকাশ’ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সংগ্রহ করত। বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, চক্রটির এসব কর্মকান্ডের বিষয়ে সিআইডির সাইবার পুলিশে কাছে তিনটি অভিযোগ আসে। এ ছাড়া ২৭ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সিলেজ সাইটের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন করেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রটির ওপর নজরদারি শুরু করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। একপর্যায়ে বরিশাল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, সংগৃহীত টাকা তারা দুবাইপ্রবাসী সানজিদা ও আশিকের নির্দেশে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে দিতেন। তাদের থেকে জব্দ হওয়া মোবাইলে বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে দেশে পাঠানোর কথা বলে সানজিদা ও আশিক দুবাইপ্রবাসীদের টাকা সংগ্রহ করতেন। আর দেশে ইনভেস্টমেন্টের নামে যে টাকা নেওয়া হয়েছে তা ব্যাংক থেকে তুলে প্রবাসীদের মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রনি খান, আরজু আক্তার ও তাসনিম রহমানের মাধ্যমে জমা করে দিতেন। এভাবে ৪-৫ কোটি টাকা হুন্ডি করে দুবাইতে পাচার হয়েছে। এ চক্রের আরও কিছু সদস্যের সন্ধান দেশের বিভিন্ন জেলায় পাওয়া গেছে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর