শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

কেমন আছে কুড়িয়ে পাওয়া দুই শিশু

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

কেমন আছে কুড়িয়ে পাওয়া দুই শিশু

রাতের আঁধারে ফুটপাতে ফেলে দেওয়া হয় এক নবজাতককে। আবার হাসপাতালে সন্তান জন্ম দিয়েই উধাও হয়ে যান মা-বাবা। এমন দুটি নবজাতক পরম মমতায় বড় হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে। এর একজন সুস্থ, অপর জনের শরীরে সামান্য সমস্যা আছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধান এবং রোগীকল্যাণ সমিতির সহযোগিতায় তাদের চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সেবা চলছে। জানা যায়, জেসমিন আক্তার নামে আনোয়ারা উপজেলার এক রোগী গত ১৮ মে রাতে প্রসব বেদনা নিয়ে চমেক হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। রাতে একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। কিন্তু সকাল হতেই তিনি ও তার স্বামী পরিচয়দানকারী উধাও হয়ে যান। পরে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এরপর থেকে ওই নবজাতকের অভিভাবককে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া, গত ২৫ জুলাই নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন জাতিসংঘ পার্কের পাশে পুটলিতে বাঁধা নবজাতক কন্যা পাওয়া যায়। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশু দুটি হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তবে একজনের কপালে জন্মগতভাবে একটি মাংসপিণ্ড আছে। অপারেশনের মাধ্যমে তা সারিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চমেক হাসপাতালের নার্স তত্ত্বাবধায়ক মোছা. ইনসাফি হান্না বলেন, নবজাতক ওয়ার্ডের ইনচার্জসহ দায়িত্বরত সব নার্সের তত্ত্বাবধানে আছে শিশু দুটি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও চলছে। যখন যে নার্স দায়িত্বে থাকেন তখন তিনিই শিশুদুটিকে মায়ের মমতা দিয়ে সেবা দিচ্ছেন। চমেক হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ সাহা বলেন, পরিচয়হীন দুটি কন্যা শিশুর ওষুধ, দুধ, ডায়াপার, ওয়েট টিস্যুসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। পাঁচলাইশ থানার নারী ও শিশু হেল্প ডেস্ক অফিসার মনিরা আক্তার বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিশু দুটি সমাজসেবা অধিদফতর পরিচালিত নগরের রৌফাবাদের ‘ছোট মণি নিবাসে’ নিতে হাসপাতালের পরিচালক বরাবরে আবেদন করেছি। তবে ছোট মণি নিবাসে নেওয়ার আগে যদি প্রকৃত অভিভাবক কিংবা কেউ আসে, তাহলে আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন সময় হাসপাতালে পরিচয়হীন নবজাতক আসে। কখনো বাইরে থেকে, কখনো হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পর মা উধাও হয়ে যান। এমন ঘটনা প্রায়ই সময় ঘটছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনেক দম্পতি একটি সন্তানের জন্য নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেন। অথচ কেউ যখন একটি নবজাতককে নালা-নর্দমা কিংবা হাসপাতালে ফেলে উধাও হয়ে যান, তখন মানবিকতা কিংবা নৈতিকতার বিষয়টি সামনে আসে। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর