শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রধান আসামি গ্রেফতার

ওসমানীর ইন্টার্নরা কাজে ফিরলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে শ্লীলতাহানির মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকাল ১০টায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ক্লাসে ফিরেছেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও।

তবে সব আসামিকে গ্রেফতারে তারা প্রশাসনকে সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন। গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শাহপরাণ থানাধীন এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি দিব্য সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি নগরীর কাজলশাহ ৫২ নম্বর বাসার রমণীকান্ত সরকারের ছেলে ও মহানগর ছাত্রলীগের কর্মী। গতকাল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দিবাগত রাতে মামলার প্রধান আসামি দিব্য সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় সভা আহ্বান করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় অংশ নেন সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী, সিলেট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ময়নুল হক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় এবং ওসমানী হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা।

ওই সভা শেষে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষে ওসমানী মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ মুন্তাকিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, মামলার প্রধান আসামি দিব্যকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালকের অনুরোধে আমরা কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছি। তবে আমরা সব আসামিকে গ্রেফতারে প্রশাসনকে সাত দিনের সময় দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে সব আসামি গ্রেফতার না হলে আমরা আবারও কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামব। কারণ আমরা নিজেদের নিরাপত্তা না পেলে রোগীদের নিরাপত্তা দেব কীভাবে? গত রবিবার দুপুরে এক রোগীর দুই স্বজনের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমন আহমদের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ওই দুই স্বজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা হয়। এর জের ধরে পরদিন রাত ৮টার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমন আহমদ ও ওসমানী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুদ্রনাথের ওপর হামলা চালায় কয়েকজন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার রাত ১০টার দিকে ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির অভিযোগে আটজনকে আসামি করে মঙ্গলবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা করা হয়। দুই মামলার আসামিরা হলেন- দিব্য, আবদুল্লাহ, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি।

 

 

সর্বশেষ খবর