শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বাউল বেশে ১২ বছর পলাতক ছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জাকির হোসেন (৪১) পলাতক ছিলেন ১২ বছর। বাউলের ছদ্মবেশ ধারণ করায় অনেকে বুঝতেই পারেনি জাকির এতটা ঠাণ্ডা মাথার খুনি। ২০১৩ সালে আবার বিয়ে করে জিনজিরায় থাকতে শুরু করেন তিনি। তবে এবার শেষ রক্ষা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার রাতে তাকে সাভার থানার শাহীবাগ থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪ এর একটি দল। 

গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাকির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের নিপা আক্তারের (২২)। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন জাকির।

এরই মধ্যে তাদের ঘরে জ্যোতি নামের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। পরে নিপা আবার অন্তঃসত্ত্বা হন। এ সময় জাকিরের সঙ্গে তারই বড় ভাই জাহাঙ্গীরের স্ত্রী তাহমিনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে জাহাঙ্গীর বাড়িতে না থাকার সুযোগে জাকির তাহমিনার ঘরে গেলে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে নিপা। নিপা তখন জাহাঙ্গীরকে সব বলে দেবে বলে জানালে জাকিরের সঙ্গে ঝগড়া হয়। এর জেরে পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় নিপাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জাকির। এ সময় শিশুকন্যা জ্যোতিকেও হত্যা করেন তিনি। মোজাম্মেল হক বলেন, এ ঘটনায় নিপা আক্তারের বাবা আবু হানিফ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর জাকিরকে গ্রেফতারও করা হয়। তবে পাঁচ বছর কারাভোগের পর ২০১০ সালে জামিনে ছাড়া পেয়ে আত্মগোপনে যান তিনি। ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি আদালত জাকিরের মৃত্যুদণ্ড দেয়। এ ছাড়া হত্যায় জড়িত তাহমিনা, আমিনুল, মিলন, স্বপন ও হাসানকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। র‌্যাব জানায়, জাকির প্রথমে পালিয়ে সাভারে যান। পরে বাউলের ছদ্মবেশ নেন। তবে এক জায়গায় বেশিদিন থাকতেন না তিনি। গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম, ঢাকার আরামবাগ, ফকিরাপুল, হাজারীবাগ ও খিলগাঁওয়ে ছিলেন।

সর্বশেষ খবর