শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

গরু পাচার, মাসে ২ কোটি রুপি পেতেন অনুব্রত

কলকাতা প্রতিনিধি

গরু পাচার, মাসে ২ কোটি রুপি পেতেন অনুব্রত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা ও দলটির বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচারের জন্য প্রতি মাসে প্রটেকশন মানি হিসেবে ২ কোটি রুপি নিতেন বলে তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই)। এ মামলায় গত বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই।

সূত্র জানায়, গরু পাচারের মামলায় সবাইকে ধরতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রথমে গ্রেফতার হন এনামুল হক। এর মাস দুয়েক আগে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গরু পাচারসংক্রান্ত বিভিন্ন সূত্রের হদিস পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। সিবিআই সূত্রে দাবি, অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো এনামুল হকের। বীরভূমের ইলামবাজারের গরুর হাটের মালিকের সঙ্গেও কথা হতো সায়গলের। সিবিআই জেরায় এনামুল জানিয়েছেন, পাচার করতে গেলে তাকে প্রটেকশন মানিয়ে দিতে হতো। তিন মাসে ৬ কোটি রুপির ডিল হতো। এনামুল রুপি দিতেন সায়গলকে। আর সেই রুপি সায়গলের হাত ঘুরে চলে যেত অনুব্রতর কাছে। যদিও তার থেকে একটা ভাগ পেতেন সায়গল। আপাতত সিবিআই হেফাজতে নিজাম প্যালেসেই রয়েছেন তিনি। সূত্রে খবর, এনামুল আর সায়গলের বয়ানের অনেক মিল পেয়েছে সিবিআই। জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে চলছিল এই গরু পাচার সম্পর্কিত ডিল। ওই সময় থেকে পাচারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন এনামুল। আর এনামুল হকের সঙ্গেই চুক্তি হতো অনুব্রত মণ্ডলের। দুজনের মধ্যে ফোনেও কথা হতো। বড়ই বর্ণময় চরিত্র এই অনুব্রত মণ্ডলের। নানুরের হাটসেরান্ডি গ্রামে বাবার মুদির দোকান ছিল। সঙ্গে ছিল গ্রিলের কারখানা ও মাছের ব্যবসা। সেই সবই দেখতে দেখাশোনা করতেন অনুব্রত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন মেজ। অষ্টম শ্রেণির পর আর পড়াশোনা করে উঠতে পারেননি। বীরভূমের রাজনীতিতে তার উত্থান অত্যন্ত চমকপ্রদ। ১৯৯৮ সালে মমতা ব্যানার্জির ডাকে সাড়া দিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। ২০০৪ সাল থেকে অনুব্রত মণ্ডল বীরভূম জেলার তৃণমূলের দায়িত্বে। কিন্তু এক সময়ে মাছ বিক্রি করা অনুব্রত কীভাবে হাজার কোটি রুপির মালিক হয়ে গেলেন সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে সিবিআই। এদিকে অনুব্রতর গ্রেফতারের পর বীরভূম জেলার সংগঠনের চাবিকাঠি কার হাতে থাকবে তা নিয়ে খুব শিগগিরই বৈঠকে বসতে চলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সেক্ষেত্রে এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি।

সর্বশেষ খবর