সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সামাজিক খুনোখুনি দেশজুড়ে

হাতুড়িপেটায় হত্যা কিশোরকে

নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইলের সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের কর্মচন্দ্রপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের হাতুড়িপেটায় আহত জুয়েল ভূঁইয়া (১৮) নামে এক কিশোরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। নিহত জুয়েল ওই গ্রামের পান্নু ভূঁইয়ার ছেলে। শনিবার  সন্ধ্যা ৭টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে, তার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতেই প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

এ সময় আসামি পক্ষের আতিয়ার শিকদার, মতিয়ার শিকদার, উজ্জ্বল শেখ, সুজন শেখ, তরিকুল ইসলাম, সেলিম, জিয়াউর, সাহিদুর, হাবিবুর ও আবুবক্কারসহ অন্তত ১৫টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। বাড়িঘরের যাবতীয় আসবাবপত্র ভাঙচুর ছাড়াও গরু, নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। এতে নারীসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহতরা হলেন- নড়াইল সদর থানার এসআই রকিবুল ইসলাম ও কনস্টেবল মাহামুদ, নাসরিন ও মুসলিমা। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছয় রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

এ ঘটনায় এসআই রকিব বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৭০-১৮০ জনের নামে নড়াইল সদর থানায় শনিবার রাতে মামলা দায়ের করেন। হামলায় জড়িত ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কর্মচন্দ্রপুর গ্রামের আতিয়ার সিকদার পক্ষ ও ইকরাম মোল্যা পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এর আগে একাধিক বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে উভয় পক্ষ। উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় হামলার শিকার হয় জুয়েল। জুয়েল বাড়ির পাশে মাদরাসা বাজারে একটি দোকানে কাজ করত। গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ভ্যানে করে দোকানে আসার পথে বেতভিটা নামক স্থানে পৌঁছালে তাকে আটক করে কর্মচন্দ্রপুর গ্রামের প্রতিপক্ষের ইয়াসিন, ফিরোজ, হাফেজসহ ৫/৬ জন তাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম করে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ প্রসঙ্গে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের ঠেকাতে গেলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে ছয় রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়া হয়। এ সময় হামলাকারীদের ইটের আঘাতে চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সহিংসতায় জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।

তিনি আরও বলেন, জুয়েলের ওপর হামলার ঘটনায় এর আগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করা হয়। এ ঘটনায় একজন জেলহাজতে আছে, বাকিরা আদালত থেকে জামিন পেয়েছে।

সর্বশেষ খবর