বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চা শ্রমিকদের

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চা শ্রমিকদের

দৈনিক মজুরি ১২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের সঙ্গে সরকারের  বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। গতকাল শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দফতরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সাধারণ চা শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় আড়াইঘণ্টা চলা বৈঠকে চা শ্রমিকরা তাদের  মজুরি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। পরে  সরকার পক্ষ থেকে শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে  যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি ২৩ আগস্ট শ্রম মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠেয় সভায় এসব দাবিনামা উত্তাপন করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু চা শ্রমিকরা সরকার পক্ষের এই আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। শনিবার থেকে দেশের ২৩১টি চা বাগানে শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হয়। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে নিজ কর্মস্থলে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে। এতে সিলেট বিভাগের  ১৩১টি চা বাগানসহ দেশের সবকটিতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। শ্রমিকদের আন্দোলনে সংকটে পড়েছে চা শিল্প।

চানপুর চা বাগানের খাইরুন আক্তার বলেন, ‘তাদের কথায় আন্দোলন বন্ধ করে দিলে সাধারণ শ্রমিকদের কি জবাব দিব। মজুরি বৃদ্ধির জন্যই তো শ্রমিকরা অন্দোলনে নেমেছে।’ খাদিম চা বাগানের স্বপ্না রানী নায়েক বলেন, ‘আমরা বার বার আলোচনায় বসতে পারব না। এবার রাস্তায় নেমেছি, রাস্তায়ই থাকব, কাজে যাব না। মজুরি বৃদ্ধি না করতে পারলে আমাদের মেরে ফেলুন।’

গীতা রানী কানু বলেন, ‘চা শ্রমিকরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ১২০ টাকা মজুরিতে কিভাবে শ্রমিকরা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকবেন। দিন দিন দ্রব্য মূল্য বাড়ছে, কিন্তু শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে না। এভাবে আর কতদিন। আন্দোলন ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ নেই।’ রাজু গৌড় বলেন, ‘মালিক পক্ষ কখনই তাদের চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে না। শ্রমিকরা ১৬৮ বছর ধরে নির্যাতিত। আমরা এই নির্যাতন থেকে মুক্তি চাই। একটু ভালেভাবে বাঁচতে চাই।’

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল বলেন,  বৈঠকে কোনো ফলপ্রসূ সমাধান আসেনি। তাই আমরা বাগানে বাগানে আন্দোলন চলিয়ে যাব। পাশাপশি সরকার ডাকলে আন্দোলন চলমান রেখেই আলোচনায় বসব। শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন  চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের কথা শুনেছি। তাদের দাবি-দাওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। তাদেরকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করার জন্য বলেছিলাম। তারা না শুনলে আমরা তো জোর করতে পারব না। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব।’

 

সর্বশেষ খবর