রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যায় জড়িত মোটরসাইকেল চালকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার যশোরের বেনাপোল ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে বেনাপোল থেকে মোল্লা শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে আরও চারজনকে গ্রেফতার করে ডিবি।
গতকাল মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- মোটরসাইকেল চালক শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীম (৩৫), তৌফিক হাসান ওরফে বাবু (৩৪), সুমন হোসেন (৩৫), এহতেশাম উদ্দিন চৌধুরী অপু (৩৭) ও শরিফুল ইসলাম হৃদয় (২৭)। সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘রাজধানীর দক্ষিণ গোড়ান থেকে শরিফুল ইসলাম ওরফে হৃদয়কে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, আট রাউন্ড গুলি, তিনটি ম্যাগজিনসহ গ্রেফতার করা হয়। বাবুর তথ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও দক্ষিণ গোড়ান থেকে জব্দ করা হয়। মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। প্রথমেই মূল শুটার আকাশকে গ্রেফতার করেছি। এরপর অন্যদের গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় আগে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ পাঁচজনসহ মোট ২৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মোল্লা শামীম বেনাপোল হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আমরা সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করি। হত্যার নির্দেশদাতা জিসান ও মানিক, আর হত্যা বাস্তবায়নে পরিকল্পনা করেন মুসা ওরফে শুটার মুসা। বোচা বাবু হত্যার পর টিপুর সঙ্গে মুসার দ্বন্দ্ব ছিল। সেই থেকেই মুসা এ হত্যার পরিকল্পনা করেন। দায়িত্ব দেন শামীমকে। মুসাকে ইন্টারপোলের সহযোগিতায় এরই মধ্যে ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছি। তার উদ্দেশ্য ছিল টিপুকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া। জিসান ও মানিক বিদেশে বসে এ হত্যার সঙ্গে যোগ দিয়ে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চেয়েছেন। মূলত জানান দিতে চেয়েছেন যে তারা এখনো রয়েছেন। হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতার করা হবে।’ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আকাশ জিজ্ঞাসাবাদে যে অস্ত্র দিয়ে হত্যা করার কথা বলেছেন তা আমরা জব্দ করেছি। দ্রুত জিসান ও মানিককে দেশে ফিরিয়ে আনব।’ ২৪ মার্চ রাত ১০টা ২০ মিনিটে শাহজাহানপুরের আমতলায় এজিবি কলোনি থেকে নিজ বাসায় যাওয়ার পথে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করা হয়। এ সময় পাশে রিকশায় থাকা কলেজশিক্ষার্থী সামিয়া আফরান প্রীতি গুলিবিদ্ধ হন। উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
