শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
বাজার দর

বাড়তি দরে ক্রেতা কম, দাম কমেছে ডিম মুরগির

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাড়তি দরে ক্রেতা কম, দাম কমেছে ডিম মুরগির

ডিম ও মুরগির দাম গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে কমতে শুরু করেছে। ফলে ক্রেতাসাধারণের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। তবে সবজি আগের মতোই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ৬০ টাকার নিচে কোনো ধরনের সবজি বাজারে নেই বললেই চলে। বাজারে আসা নতুন শিমের কেজি ১৯০ টাকা ছুঁয়েছে। এ ছাড়া চাল, ডাল, তেলসহ বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম এখনো বেশি। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে দেখা যায়, ডিমের দাম ডজনে কমেছে প্রায় ৩০ টাকা। আর ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। রামপুরা বাজারে গতকাল কথা হয় বিক্রেতা শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ডিমের এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অনেকে ডিম ও মুরগি কেনাই বন্ধ করে দেয়। বিক্রি কমে যাওয়ার কারণেই দাম কমেছে। বাজারগুলোতে গতকাল একডজন ডিম ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ মাত্র দুই দিন আগে এই ডিম ডজনপ্রতি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর মুদি দোকানে গত সপ্তাহে প্রতিটি পিস ডিম বিক্রি হয়েছে ১৬ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ী হাসানুর রহমান বলেন, যেভাবে ডিমের দাম বেড়েছিল, তাতে বোঝা যায় সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছিল। বিক্রি কমে যাওয়ায় ঠিকই দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আর দাম বাড়বে বলে মনে হয় না। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী খায়রুল হোসেন বলেন, গত দুই দিনে ডিমের দাম ডজনে ৩০ টাকা কমেছে। অথচ এই দাম আরও কমা উচিত। আসলে ডিমের দাম পুরোপুরি নির্ভর করে গাজীপুরের ব্যবসায়ীদের ওপর। গাজীপুরে অভিযান চালালে কয়েকদিনের মধ্যে ডিমের দাম আরও কমে যাবে। তবে কেউ কেউ জানান, মুরগির খাবারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় মুরগি ও ডিমের দাম বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু চাহিদা কমে যাওয়ায় এই দাম কমাতে হয়েছে।

জ্বালানি তেল কেরোসিন, ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের মূল্যবৃদ্ধির পর দফায় দফায় বাড়ে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। এতে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা হয়ে যায়। গত সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। রামপুরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসা ফাতেমা বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম ১৮০ টাকা কেজি অস্বাভাবিক। এই দাম কিছুতেই ১৫০ টাকার ওপরে হওয়া উচিত না।

কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, কাপ্তান বাজার মুরগির বাজারের জন্য পরিচিত হলেও, মুরগির দাম এখানকার ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে না। যখন চাহিদা বাড়ে তখন খামারিরা হুট করে মুরগির দাম বাড়িয়ে দেয়। আবার চাহিদা কমলে দাম কমিয়ে দেয়। ব্যবসায়ীদের কিছু করার নেই। এখন মুরগির চাহিদা কিছুটা কমায় দামও কমে গেছে। আমাদের ধারণা সামনে আরও কমবে। সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শিম। প্রতি কেজি শিম ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পাকা টমেটোরও। এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচা পেঁপের কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কচুর লতি, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় গত সপ্তাহে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে যায়। এ সপ্তাহে সবজির দাম তেমন পরিবর্তন আসেনি। সব সবজিই গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পিঁয়াজ ও আলুর। পিঁয়াজ গত সপ্তাহের মতো ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। তবে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে। গত সপ্তাহে ২৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ এখন ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর