রংপুরে বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতিতে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বস্তায় আদা চাষের জন্য আলাদা করে জমির প্রয়োজন নেই। বস্তা পদ্ধতিতে অতিবৃষ্টি বা বন্যায় ফসল ডুবে নষ্ট হওয়ার ভয়ও কম। আবার একটি ফসল তোলার পর সেখানে আলাদা করে কোনো সার ছাড়াই আরেকটি ফসল ফলানো যায়। উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে। সিমেন্ট বা আলুর বস্তায় আদা চাষের পর হলুদ, শাকসবজি ফলানোও সহজ। অনেকে আবার ছাদবাগানেও আদার চাষ করছেন। ফলে অনেকেই বস্তায় আদা চাষ করে পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,     চলতি মৌসুমে এ জেলায় ১ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছে। এ ছাড়া বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষ হয়েছে। এ পদ্ধতিতে একদিকে যেমন মাটিবাহিত রোগের আক্রমণ কমে যায়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বস্তা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। বাড়ির উঠোন, প্রাচীরের কোলঘেঁষে বা বাড়ির আশপাশের ফাঁকা জায়গা অথবা ছাদে যেখানে খুশি রাখা যায়। এর জন্য আলাদা কোনো জমি বা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। জুন-জুলাইয়ে আদা লাগালে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে তোলার উপযুক্ত হয়ে যাবে। এক একটি বস্তায় তিনটি গাছ থেকে এক-দেড় কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যেতে পারে। আদা তুলে নেওয়ার পর সেখানে সবজি চাষ করা যেতে পারে। সেজন্য নতুন করে মাটি তৈরি করারও দরকার নেই। কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের একজন শৌখিন আদা চাষি সাংবাদিক নিতাই রায়। তিনি জানালেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে বাড়ির চারপাশে সাড়ে ৪ হাজার বস্তায় আদার চাষ করেছেন। এতে ব্যয় হয়েছে ৪০-৫০ হাজার টাকা। প্রতিটি বস্তায় ১০ থেকে ১৫টি আদার গাছ জন্ম নিয়েছে। তিনি আশা করছেন সাড়ে ৪ হাজার বস্তায় প্রায় সাড়ে ৪ টন আদা উৎপাদন হবে। এতে তাঁর আয় হবে প্রায় ৪ লাখ টাকা।

বুড়িরহাটের অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা স্বপন চৌধুরী জানালেন, তিনি প্রতি বছর বাড়ির উঠানে এবং বাগানের গাছের ফাঁকে ফাঁকে শতাধিক বস্তায় আদা চাষ করেছেন। এতে তাঁর সংসারের সারা বছরের আদার চাহিদা মিটে যায়। বাড়তি আদা আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের দেন। খামারবাড়ি ঢাকার উপপরিচালক (এলআর) আবু সায়েম জানান, অনেকে শখের বশে বস্তায় আদা চাষ করলেও এ পদ্ধতি এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এভাবে বস্তায় আদা, হলুদ, শাকসবজি চাষ করা যায়।