শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ

সেলিম জনপ্রতিনিধি হিসেবে ঘৃণিত কাজ করেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাল নথি ও ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ভিত্তিহীন রিট করে আদালতের সময় নষ্ট করায় চাঁদপুরের বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানকে ৫০ লাখ ও অপর দুই রিটকারীকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাই কোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, সেলিম চেয়ারম্যান জনপ্রতিনিধি হিসেবে ঘৃণিত কাজ করেছেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় ব্যবহার করে অবৈধ, অনৈতিক ও জনস্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন। দুই মাসের মধ্যে জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে। জমা না দিলে চাঁদপুর জেলা প্রশাসককে তাদের কাছ থেকে এ টাকা আদায় করতে বলা হয়েছে। গত ৯ জুন এ বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট এ রায় দেন। গতকাল ওই রায়ের ২১ পৃষ্ঠা পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান রায় প্রকাশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া আইন মন্ত্রিসভা চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করে ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর। আর জাতীয় সংসদে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস হয় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয় ২০২১ সালের ৬ এপ্রিল। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকার প্রাক্কলন প্রস্তুত করে অর্থ ছাড়ের জন্য গত বছরের ৪ নভেম্বর উপাচার্য বরাবরে চিঠি দেয়। ওই বছরের ১৪ অক্টোবর জমির মূল্যহার পরীক্ষা ও সংগ্রহের জন্য ১৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। এদিকে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকার প্রাক্কলন প্রস্তুত নিয়ে আপত্তি জানিয়ে জেলা প্রশাসনের প্রাক্কলন সংশোধন চেয়ে গত বছরের নভেম্বরে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন দেন চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম খান ও অন্যরা। পরে মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চায়। চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন পাঠায়। এ অবস্থায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের ১৪ অক্টোবরের (মূল্যহার পরীক্ষায় কমিটি গঠন) এবং ৪ নভেম্বরের (১৯৪ কোটি টাকা প্রাক্কলন) স্মারকের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সেলিম খান ও তার ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তি হাই কোর্টে পৃথক রিট করেন। গত বছর করা পৃথক রিটে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইনের ৯(১) (ক) ধারা অনুযায়ী প্রাক্কলন নির্ধারণের নির্দেশনাও চাওয়া হয়। সেলিম খানের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর হাই কোর্ট রুল দেন। অপর রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৩০ নভেম্বর হাই কোর্ট রুল দেন। পৃথক রিটের (রুল) ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে রায় দেন হাই কোর্ট।

 

সর্বশেষ খবর