শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অধ্যাপককে হত্যায় সহযোগী অধ্যাপক

নিজস্ব প্রতিবেদক

অধ্যাপককে হত্যায় সহযোগী অধ্যাপক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। ৬৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ জীবিত থাকলে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন    কোনোদিন অধ্যাপক না হতে পারার শঙ্কায় ছিলেন। এমন শঙ্কা থেকেই তাহেরকে খুন করেন তিনি।

এর আগে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষে ৫ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় ঘোষণা করেন। গতকাল পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের কথা জানান আইনজীবীরা। রায়ে অধ্যাপক তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে আপিল বিভাগ। পাশাপাশি দুই আসামি নাজমুল আলম ও তার সম্বন্ধী আবদুস সালামের যাবজ্জীবন দন্ডও বহাল রাখেন আদালত। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিক। তাহেরের পরিবারের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যূথী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন তৎকালীন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (বর্তমানে হাই কোর্টের বিচারপতি) বিশ্বজিৎ দেবনাথ। মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক তাহেরের মৃতদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

 অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে বেকসুর খালাস দেন। খালাসপ্রাপ্ত চার্জশিটভুক্ত দুই আসামি হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সী। ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ এ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। পরে নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদন্ড নিশ্চিতকরণ) হাই কোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। সেসব আবেদনের শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির দন্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন হাই কোর্ট। ফাঁসির দন্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে যে দুই আসামির, তারা হলেন অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও মো. জাহাঙ্গীর আলম। যে দুজনের ফাঁসির দন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও তার সম্বন্ধী আবদুস সালাম।

সর্বশেষ খবর