শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
মিতু হত্যা মামলা

মুছা-কালুর অবস্থান সাত বছর পরও ‘অজানা’

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

মুছা-কালুর অবস্থান সাত বছর পরও ‘অজানা’

আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি কামরুল ইসলাম শিকার ওরফে মুছা সিকদার এবং খাইরুল ইসলাম কালু। এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী থেকে শুরু করে বাস্তবায়নে যুক্ত সাতজনের মধ্যে পাঁচজন গ্রেফতার হলেও সাত বছর ধরে নিরুদ্দেশ মুছা এবং কালু। তবে মুছা-কালুর বিষয়ে প্রশাসন থেকে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক এবং তদন্ত কর্মকর্তা আবু জাফর ওমর ফারুক বলেন, ‘তদন্তকালে আমরা মুছা এবং কালুকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেছি। তবে তাদের কোনো সন্ধান পাইনি। ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় চার্জশিটে তাদের নাম এসেছে।’

এই সূত্রের তথ্যানুযায়ী, মিতু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মুছা কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বেই মিতুকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করা হয়। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া সদস্যরা মিতুকে কোপ দেওয়ার পর তিনি প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কালু জাপটে ধরে মিতুকে মাটিতে ফেলে দেন। তাই চার্জশিটে দুজনকেই আসামি করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ সময়ে মামলা তদন্ত করেছে থানা পুলিশ থেকে শুরু করে, ডিবি এবং সর্বশেষ পিবিআই। গত সাত বছরে গ্রেফতার করা হয় বাবুল আকতারসহ পাঁচ আসামিকে। কিন্তু কেউ ‘টিকিটি ছুঁতে’ পারেনি মুছা-কালুর। যদিও তাদের পরিবার বলছে ভিন্ন কথা। ঘটনার ১৭ দিন পর ২২ জুন মুছাকে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানা এলাকায় এক আত্মীয়র বাসা থেকে পুলিশ পরিচয়ে উঠিয়ে নেওয়া হয়। একই সময় তুলে নেওয়া হয় কালুকেও। এরপর থেকে তাদের আর কোনো সন্ধান পাচ্ছে না পরিবার। সন্ধান চেয়ে ভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়েছেন মুছার স্ত্রী পান্না আকতার। তাদের সন্ধান চেয়ে মুছার স্ত্রী সরব থাকলেও এখন এ বিষয়ে তিনিও মুখ খুলছেন না।

মিতু হত্যাকাণ্ডের আলোচিত ব্যক্তি মুছা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া উপজেলার বাসিন্দা। তিনি এক সময় বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। সৌদি আরবে শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও তিনি ২০০৩ সালে দেশে ফিরে আসেন। একপর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আকতারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ২০১৩ সাল থেকে তিনি বাবুলের সোর্স হিসেবে কাজ করতে থাকেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের পাঁচ বছর পর পিবিআইর তদন্তে এ খুনের সঙ্গে বাবুল আকতারেরই  সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এরপর ঘুরে যায় আলোচিত এ মামলার তদন্ত। অতঃপর গ্রেফতার করা হয় বাবুল আকতারকে। ওই মামলায় বাবুল বর্তমানে কারাগারে বন্দি রয়েছেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এ মামলার ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র প্রদান করে পিবিআই, যাতে বাবুল আকতারসহ সাতজনকে আসামি করা হয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর