বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

বাংলাদেশের প্রশংসায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার তিন দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়োচিত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন। অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, দুর্যোগ মোকাবিলা খাতসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিশেষত করোনাকালীন বাজেট সহায়তা, করোনা মোকাবিলা ও করোনার টিকা কিনতে অর্থায়নের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের আরও জোরদার ও ফলপ্রসূ অংশীদারির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকাকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। মার্টিন রেইজার বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারাবাহিকতা বিশ্বের অনেক দেশের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সর্বোচ্চ আইডিএ ঋণ গ্রহণকারী দেশের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ নিজেই তাদের অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করবে, বিশ্বব্যাংক সহযোগী হিসেবে পাশে থাকবে। বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অদম্য অগ্রগতির সাফল্যগাথা অন্যান্য দেশকে জানাতে চায়। বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং বিশ্বব্যাংক সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধির সাক্ষাৎ : প্রকল্পের অর্থায়নে অযথা সময়ক্ষেপণ না করতে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিশ্বব্যাংকের সাউথ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার গতকাল সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় সভা করেন। এ সময় পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। নসরুল হামিদ বলেন, আগামীতে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল এবং হাইড্রোজেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক অবদান রাখবে। হাইড্রোজেন পলিসি বিনির্মাণে এবং ইলেকট্রিক ভেহিক্যালের জন্য অংশীজনদের আগ্রহী করাতে বিশ্বব্যাংক অবদান রাখতে পারে। বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটকে মানসম্পন্ন ও আন্তর্জাতিক মানের করতে তিনি বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ ছাড়া বায়ু বিদ্যুৎ, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ সময় নবায়ণযোগ্য জ্বালানি, ক্যাপটিভ পাওয়ার, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট, সোলার ইরিগেশন পাম্প, লিথিয়াম ব্যাটারি, জলবিদ্যুৎ, আঞ্চলিক পাওয়ার ট্রেড, নেট মিটারিং ও রুপটফ সোলার, গ্রিন বিল্ডিং, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দক্ষ ও সাশ্রয়ী ব্যবহার, তেল রিফাইনারি, ল্যান্ড বেজড এলএনজি টার্মিনাল ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।

বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, নবায়ণযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণ এবং সম্ভাবনার নতুন নতুন ক্ষেত্র অন্বেষণ বাংলাদেশকে উজ্জ্বলতর করছে। দক্ষতা বৃদ্ধি, নবায়ণযোগ্য জ্বালানি ও পাওয়ার ট্রেড সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের গ্যাস মিটার-সংক্রান্ত ২টি প্রকল্প বিশ্বব্যাংকে অনুমোদিত হয়েছে। যা ২০২৩ সালের জানুয়ারি হতে শুরু হবে। আর বিদ্যুৎ খাতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বর্তমানে ছয়টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর