বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নেতা-কর্মীদের তালিকা সংগ্রহের নামে পুলিশের হয়রানি : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেছেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পুলিশ বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার নামে হয়রানি করছে। এটি দেশে বিরাজমান ভয়ের পরিস্থিতিকে আরও আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলছে। গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ রাজনৈতিক কর্মীদের একজনের কাছ থেকে অন্যজনের তথ্য সংগ্রহে লিপ্ত রয়েছে। পুলিশের এই কর্মকাণ্ড দেশের সংবিধান, ফৌজদারি কার্যবিধি, পুলিশ আইন বা পুলিশবিধি কিংবা অন্য কোনো আইন দ্বারা সমর্থনযোগ্য নয়। পুলিশের এমন কার্যক্রম একদিকে যেমন নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করছে, অন্যদিকে নাগরিকের আইনি অধিকার ভোগ ও তার ব্যক্তিস্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া এটি সংবিধানের ৩১, ৩২ ও ৪৩ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলেও দাবি করেন তিনি। বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২ ও ৪৪ ধারায় একজন নাগরিক যুক্তিসংগত কারণে কোনো পুলিশ কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করবে বলে বলা হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ফৌজদারি কার্যবিধির আওতায় যদি একজন পুলিশ কর্মকর্তা কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার এখতিয়ার ধারণ করেন বা আমলযোগ্য অপরাধের সম্পৃক্ততার যুক্তিসংগত কারণ পান এবং ওই ব্যক্তি যদি পালানোর চেষ্টা করেন কিংবা তার শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার কোনো আশঙ্কা থাকে বা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে বা ৪৪ ধারায় উল্লিখিত দণ্ডবিধির কোনো অপরাধ সংঘটনের তথ্য থাকে, তবেই কেবল ওই পুলিশ কর্মকর্তা একজন নাগরিকের সহযোগিতা চাইতে পারেন, অন্য কোনো কারণে নয়। ৪২ ও ৪৪ ধারা প্রয়োগ করতে গেলেও আগে প্রমাণ করতে হবে যে নাগরিকের কাছ থেকে কোনো তথ্য বা সহযোগিতা চাইতে হলে যুক্তিসংগত কারণ থাকতে হবে এবং সেই কারণ অবশ্যই উল্লিখিত আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হবে। ফখরুল বলেন, চলমান অবস্থায় এটা দৃশ্যত প্রতীয়মান হয়, পুলিশ বিএনপিসহ ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনের উদ্দেশ্যে তাদের গণহারে শুধু নাম-ঠিকানায় নয়, তাদের পেশা, সন্তান ও সম্পত্তির বিবরণসহ চৌদ্দগুষ্টির যাবতীয় বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে, যা দেশে বিরাজমান আতঙ্কের পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলছে। বিএনপি এ অবস্থার অবসান চায়। ফখরুল বলেন, ‘আমরা পুলিশ কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি, এভাবে সাধারণ নাগরিক, রাজনৈতিক কর্মীদের হয়রানি বন্ধ করে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য তারা তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।’ এ সময় সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের দেশের জন্য গর্ব বয়ে আনায় খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান মির্জা ফখরুল। রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতার পরও আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ জাতির সঙ্গে মশকরা কমিশনের মশকরা ছাড়া কিছু নয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর