শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

লাল ঢেঁড়স চাষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

লাল ঢেঁড়স চাষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়

শৌখিন কৃষক আজাদুল হক সারা বছরই বাণিজ্যিকভাবে লাউ, বেগুন, তরমুজ, সাম্মাম, বরবটি, করলাসহ নানা ধরনের ফল ও সবজি আবাদ করছেন। একেক সময় নতুন নতুন জাতের সবজি ও ফল চাষ করে এলাকায় চমকের সৃষ্টি করছেন। এবারও তিনি লাল রঙের ঢেঁড়স চাষ করেছেন। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে শুধু জৈব সার প্রয়োগের মাধ্যমে লাল রঙের ঢেঁড়স চাষ করে বাজিমাত করেছেন। সবুজ জাতের সবজির চেয়ে ঢেঁড়স চাষে সময় ও খরচ কম হওয়ায় দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তিনি। চাহিদা ও ভালো দাম পাওয়ায় বেজায় খুশি। কৃষক আজাদুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের বাউতলা গ্রামের মৃত আবদুল আলিম মিয়ার ছেলে। লাল রঙের ঢেঁড়সের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে ভিড় করছেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে সবুজ সমারোহ। মাঝখানে লাল রঙের ঢেঁড়স। সবুজ জমিতে লাল রঙের সবজি দেখতে আসা মানুষের নজর কাড়ছে। সকাল-বিকাল জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আজাদুল।

কৃষক আজাদুল হক বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর প্রবাসে ছিলাম। প্রায় ৪ বছর আগে দেশে এসেছি। এরপর  অনেকটাই যেন বেকার হয়ে পড়ি। বেকারত্ব দূর করতে চেষ্টা করি কিছু একটা করতে। এরই মধ্যে ইউটিউব দেখে কৃষির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে পরীক্ষামূলক ৪০ শতাংশ জমিতে লাউ-বেগুন চাষ শুরু করি। প্রথম বছর সবজি চাষে খরচ বাদে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় হয়। এরপর আগ্রহ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এখন তিনি সারা বছরই নানা রকম সবজি ও ফল আবাদ করছেন। এ বছর তিনি কৃষিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মতো লাল রঙের ঢেঁড়স চাষ করেন। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ৪৫ শতাংশ জমিতে তিনি তাইওয়ানের রেডকুয়িন জাতের ১৫শ ঢেঁড়স চারা লাগিয়েছেন। জমি তৈরি, বীজ ও আবাদসহ প্রায় ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।  চারা লাগানোর ৪০ দিনের মাথায় গাছে ফলন আসতে শুরু করে। বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন লাল ঢেঁড়স। স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা বেশ ভালো। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে। একেকটি গাছে ৩-৪ কেজি ঢেঁড়শ পাওয়া যাবে। যেভাবে গাছে ফলন আসছে তাতে খরচ বাদে ও নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তিনি। দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজীরবাজার এলাকার বাবুল মিয়া বলেন, সাধারণত আমরা ছোটবেলা থেকেই সবুজ রঙের ঢেঁড়স দেখে আসছি। কৃষকরা সবুজ রঙের ঢেঁড়স চাষ করে থাকেন। আর ওই ঢেঁড়সই সব সময় আমরা খেয়ে আসছি। কিন্তু লাল রঙের ঢেঁড়স চোখে পড়ছে না। কৃষক মিলন মিয়া বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে নানা জাতের সবজি করছি কিন্তু লাল ঢেঁড়স চাষ করিনি। লাল রঙের  ঢেঁড়স চাষের খবর শুনে কয়েকবার এখানে দেখতে এসেছি। উপজেলা কৃষি র্কমর্কতা শাহানা বেগম বলেন, উৎপাদিত সবজি চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। কৃষক আজাদুল হক বছরজুড়ে নানা প্রকারের সবজি ও ফল চাষ করছেন। প্রথমবারের মতো লাল রঙের ঢেঁড়স চাষে তিনি এক প্রকার চমক সৃষ্টি করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে তিনি লাভবান হবেন বলে আশা করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর