দেবী শক্তির বন্দনা এবং অসুর বধে অশুভ খন্ডনের প্রত্যয়ে আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাঅষ্টমী পালিত হবে। গতকাল নবপত্রিকা প্রবেশ, সপ্তমী পূজা এবং সন্ধ্যা আরতির মধ্য দিয়ে মহাসপ্তমী পালিত হয়েছে। পঞ্জিকা অনুযায়ী শনিবার রাত ৯টা ৭ মিনিটে সপ্তমী তিথি শুরু হয়ে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে শেষ হয়েছে। কুমারী পূজা, সন্ধি পূজা এবং অষ্টমী পূজার মধ্য দিয়ে পালিত হবে মহাঅষ্টমী।
সপ্তমী তিথি শেষে শুরু হয়েছে অষ্টমী তিথি। আজ বিকাল ৪টা ২৯ মিনিটে অষ্টমী তিথি শেষ হবে। সন্ধি পূজা ৪টা ৫ মিনিটে শুরু হয়ে ৪টা ৫৩ মিনিটে শেষ হবে। আজ ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সকালে দুর্গা দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপনের মধ্য দিয়ে সপ্তামাদি কল্পারম্ভ শুরু হয়। এরপর কয়েক দফায় অঞ্জলি প্রদান করেন উপবাসরত ভক্তবৃন্দ। সনাতন ধর্ম মতে, এই আচারের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কৃষি, খনিজ, বনজ, জলজ, প্রাণিজ ও ভূমি সম্পদ রক্ষার জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন। সপ্তমী লগ্নে নবপত্রিকা প্রবেশ একটি ‘প্রতীকী’ পূজা। ‘নবপত্রিকা’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ নয়টি গাছের পাতা। এ পূজায় কদলী বা রম্ভা (কলা), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (দাড়িম), অশোক, মান ও ধান এই নয়টি উদ্ভিদকে পাতাসহ একটি কলা গাছের সঙ্গে একত্র করা হয়। পরে এক জোড়া বেলসহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লাল পাড়ে সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। তার কপালে সিঁদুর দিয়ে সপরিবার দেবীপ্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম ‘কলাবউ’। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। দুর্গাপ্রতিমার সামনে একটি দর্পণ বা আয়না রেখে সেই দর্পণে প্রতিফলিত প্রতিমার প্রতিবিম্বে বিভিন্ন উপচারে দেবীকে স্নান করানো হয়। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে অঞ্জলি দিতে আসা আরতি সাহা বলেন, সপ্তমী পূজার মধ্যদিয়ে মূলত পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। উপবাস থেকে অঞ্জলি দিয়ে দেবীর পায়ে সমর্পণ করা হয় মনের সব পাপ, তাপ, শোককে। বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজা মন্ডপে সন্ধ্যার পর শুরু হয় আরতির ধুম। আগমনি গান এবং নানারকম আয়োজনে জমজমাট হয়ে ওঠে পূজামন্ডপ। উৎসব উপলক্ষে মন্দিরে মন্দিরে আরতি ও সংগীত প্রতিযোগিতা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশেষ প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, আজ ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজার সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
