বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

চীবরদান উৎসব শুরু

রাঙামাটি প্রতিনিধি

চীবরদান উৎসব শুরু

গাছের শেকড়, গুঁড়ি, ছাল, শুকনো পাতা ও ফুল থেকে রং। তুলা থেকে সুতা। সুতা থেকে কাপড়। সে কাপড় সেলাই করে তৈরি করা হয় চীবর। অর্থাৎ ভান্তেদের পরিধানের বিশেষ বস্ত্র। তাও আবার কোমর তাঁতে তৈরি করতে হয় মাত্র ২৪ ঘণ্টায়। এ পোশাক তৈরি অনেকটা কঠিন হওয়ায় নৃ-গোষ্ঠীরা এটিকে কঠিন চীবর বলে থাকেন। পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারীরাই এ চীবর  তৈরিতে অংশগ্রহণ করেন। তাদের মতে, প্রবারণা পূর্ণিমার পর থেকে এ কঠিন চীবর দান উৎসব শুরু হয় মাসব্যাপী। তবে এ প্রস্তুতি চলে চীবর দানোৎসবের শুরুর এক মাস আগে থেকে। রাঙামাটির মত্রী চাকমা জানান, চীবর হচ্ছে বৌদ্ধ ভান্তেদের পরিধানের একটি বিশেষ বস্ত্র। এটাকে কঠিন চীবর বলা হয়। কারণ এ চীবর তৈরি করা অনেক কষ্টের এবং কঠিন। বাঁশবাগান থেকে কাঁচা বাঁশ সংগ্রহ করে তৈরি করা হয় রদাং অর্থাৎ কোমর তাঁত ও চরকা। এরপর গাছের ছাল-বাকল থেকে রং তৈরি করতে হয়। একই সঙ্গে জুম থেকে তুলা সংগ্রহ করতে হয়। সংগৃহীত তুলা ও রং একসঙ্গে করে সুতা প্রস্তুত করে বুনন করতে হয় চীবর। উৎসবের দীন বিহারগুলোতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা ২৪ ঘণ্টায় এসব কাজ সম্পন্ন করে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও ভান্তেকে দান করেন। এতে অংশগ্রহণ করা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এক পুণ্যের কাজ। তাই সব বয়সের নারী-পুরুষের সমাগম হয় এ উৎসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে রাঙামাটির বিভিন্ন বিহারে শুরু  হয়েছে কঠিন চীবর দানোৎসব। রাঙামাটির আসাম বস্তি বুদ্ধাঙ্কুর বৌদ্ধ বিহার ও উলুছড়ি ছাবা বৌদ্ধ বিহারে এরই মধ্যে শেষ হয়েছে চীবর উৎসর্গের কার্যক্রম। তবে মাসব্যাপী চলবে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের বিভিন্ন বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান। এতে যোগদান করতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসে হাজারো পুণ্যার্থী ও ভক্ত। রাঙামাটি রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, বাংলা চন্দ্রপঞ্জিকা অনুযায়ী প্রবারণা পূর্ণিমার (ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা) পর চীবর দান উৎসব শুরু হয়। এ অনুষ্ঠানে মূলত বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ত্রি-চীবর নামে বিশেষ পোশাক দান করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর