শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

গোমতীর চরে মুলা চাষ

কুমিল্লা প্রতিনিধি

গোমতীর চরে মুলা চাষ

সময়মতো মুলা চাষ না করে অনেক কৃষক লাভবান হন না। কারও কাছে তাই মুলা ফেলনা সবজি। তবে মুলা আগাম চাষে গোমতীর চরের কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। কেউ কেউ টানা ৩-৪ বার মুলা চাষ করেছেন। লাভ পাচ্ছেন তিন গুণ। তাই এই মুলা এখন কৃষকের নিকট সাদা সোনায় পরিণত হয়েছে।

কৃষি অফিসের সূত্রমতে, কুমিল্লা সদর, বুড়িচং, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, দাউদকান্দি  উপজেলার গোমতী নদীর চরের কৃষকদের জমিতে এখন মুলার হাসি দেখা যাচ্ছে। আষাঢ় মাস থেকেই মুলা বপন শুরু করেন বুড়িচং উপজেলার ভান্তী এলাকার মুলা চাষিরা। ইতোমধ্যে কেউ তিনবার, কেউবা চারবার মুলা চাষ করেছেন। ৩৫-৪০ দিনে কৃষক উৎপাদন করছেন এই মুলা। ৪০ শতাংশের প্রতি কানি জমিতে আয় করেছেন প্রতিবারে ৩০-৬০ হাজার টাকা। কানি প্রতি বিক্রি হয় ৬০-১ লাখ টাকা। যেখানে খরচ হয় ৩০-৪০ হাজার টাকা।

এলাকার চাহিদা মিটিয়ে মুলা চলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার আড়তে। মুলা উৎপাদনের পর কৃষক চরের জমিতে চাষ করেন আগাম আলু।

আলু বপনের ১০-১৫ দিন পর সাথী ফসল হিসেবে বপন করা হয় মিষ্টি কুমড়ার বীজ। স্থানীয় ভান্তী গ্রামের কৃষক আবু তাহের মেম্বার ও ফারুক আহমেদ বলেন, বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলে গোমতী প্লাবিত হলে বন্যার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া মুলার গায়ে ক্ষত সৃষ্টিকারী পোকার আক্রমণ হয়। এই দুই বিষয়ে মাঝে মাঝেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মুলা চাষিরা পোকার উপদ্রব থেকে স্বস্তি চান। স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেন, ষোলনল ব্লকের বালিখাড়া, পূর্বহুড়া ও কামারখাড়ায় মুলার চাষ বেশি হয়। পোকার উপদ্রব থেকে স্বস্তি দিতে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, মুলা চাষিদের বালাইনাশকের খরচ কমিয়ে আনাসহ নিরাপদ মুলা উৎপাদন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ব বিভাগের একটি গবেষক দল আগামী সপ্তাহে মুলার জমি পরিদর্শন করবেন। সেই সঙ্গে মুলা চাষিদের নিয়ে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের কথা চলছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, গোমতী চরের পলি মাটিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ হয়। এখানের চরে ৪ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। চরে আগাম মুলা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তাই তারা টানা ৩-৪বারও মুলা চাষ করেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর