শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

যানজটে থমকে যায় কুমিল্লা সিটি

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

যানজটে থমকে যায় কুমিল্লা সিটি

কুমিল্লা এখন যানজটের নগরী। প্রতিদিন যানজটে থমকে যায় নগরীর বিভিন্ন এলাকা। অধিকাংশ মোড়ে, অলিগলিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দীর্ঘক্ষণ থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকেও। তবু যানজটে মানুষ হাঁসফাঁস করছে।

নগরী ঘুরে দেখা যায়, নগরীর কান্দিরপাড়, মনোহরপুর, নিউমার্কেট, রাজগঞ্জ, মোগলটুলী, চকবাজার, রেইসকোর্স, শাসনগাছা, রানীর বাজার, টমছম ব্রিজ ও জাঙ্গালিয়ায় দিনভর যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মূল সড়কের যানজট থেকে বাঁচতে অনেকে গলিতে প্রবেশ করেন। সেখানেও যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। বিশেষ করে কুমিল্লা মডার্ন স্কুল, কুমিল্লা জিলা স্কুল, ওয়াই ডব্লিউসিএ স্কুল, এথনিকা স্কুল ছুটি হলে নগরী থমকে যায়। এ ছাড়া কান্দিরপাড়-পুলিশ লাইন সড়কে মুন হসপিটালের সামনে, লাকসাম রোডে কুমিল্লা টাওয়ারের সামনে দিনভর যানজট লেগে থাকে। লাকসাম রোডে অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড যানজট বাড়িয়ে দিয়েছে। মনোহরপুরের খন্দকার হক টাওয়ার, সাত্তার খান কমপ্লেক্সের সামনের সড়ক চলাচলের অনুুপযুক্ত হয়ে পড়ছে। ফৌজদারি সড়কের পাশে ওয়ার্কশপের গাড়ি সড়কে রাখা হচ্ছে। কান্দিরপাড়ের ফুটপাত আবার দখল হয়ে গেছে। মানুষকে হাঁটতে হচ্ছে সড়কে। একই অবস্থা কান্দিরপাড় থেকে রানীর বাজার সড়কে। ওই সড়কের ক্যাতয়নী কালীবাড়ির সামনে সড়কের একাংশ ভাঙা। সড়কের ভালো অংশে হকার তার বক্স রেখেছে। পাশের ফুটপাতে দোকানি তার মালামাল রাখছে। সরু সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পার্কিং করা হচ্ছে। রামঘাটলা এলাকার সিএনজি স্ট্যান্ড নগরীর বড় দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে সিএনজি অটোরিকশা ঘোরাতে গিয়ে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। স্ট্যান্ড সরানো এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাসনগাছা রেল ওভারপাস যানজট নিরসনের জন্য স্থাপন করা হলেও চার বছরেই তার গুরুত্ব হারাচ্ছে। রেল ওভারপাসের ওপরে-নিচে প্রতিদিন থেমে থেমে যানজট লাগছে। এতে প্যারালাইজড হয়ে পড়ছে নগরীর পশ্চিমাঞ্চল। চকবাজার এলাকায় সড়কে বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠায়। সড়কে অটোরিকশার স্ট্যান্ড। নগরীর কান্দিরপাড়ের মতো লিবার্টি মোড়, নিউমার্কেট এলাকায়ও হযবরল অবস্থা। এখানে সড়কে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড রয়েছে। নগরীর ঠাকুরপাড়া বাগাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ডা. গোলাম শাহজাহান বলেন, নগরীর সড়কগুলো অনেক সংকীর্ণ। তার ওপর প্রয়োজনের বেশি ইজিবাইক ও রিকশা চলছে। সড়ক সম্প্রসারিত না করলে যানজটের দুর্ভোগ দিন দিন বাড়তে থাকবে। প্রয়োজনে সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট কুমিল্লার সম্পাদক প্রকৌশলী মীর ফজলে রাব্বী বলেন, অবৈধ পরিবহনগুলো নিয়ন্ত্রণে না আনলে যানজট ও দুর্ঘটনা বাড়তেই থাকবে। সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছে ব্যাটারিচালিত টমটম। কুমিল্লা মোটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, রাজগঞ্জ, কান্দিপাড় মোড়, লাকসাম রোড, কান্দিরপাড় থেকে রানীর বাজার সড়কের প্রবেশমুখ ও টমছম ব্রিজে বেশি যানজটের সৃষ্টি হয়। এখানে সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা দাঁড়ানোর কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। এগুলোকে সরিয়ে দিতে ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। কুমিল্লার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জিয়াউল চৌধুরী টিপু বলেন, নগরীতে দিন দিন গাড়ি ও মানুষের চাপ বাড়ছে। আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। পুলিশ সুপার মহোদয় যানজট নিয়ন্ত্রণে আন্তরিক। তিনি আরও বলেন, নগরীর অধিকাংশ মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে গাড়ি রাখার কথা। সেখানেও দোকান বসানো হয়েছে। অনেকে রাস্তায় গাড়ি রাখছেন। সবাই সচেতন না হলে পুলিশ একা কিছু করতে পারবে না। এদিকে নগরীতে দিনের বেলায় বাস প্রবেশ, টমছম ব্রিজ এলাকায় বাস  ঘোরানোর বিষয়েও ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।

 

সর্বশেষ খবর