মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

নকল সোনার বার বিক্রির নামে ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নকল সোনার বার, ম্যাগনেটিক পিলার ও কয়েন বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিবার রাতে রাজধানীর বিমানবন্দর ও দক্ষিণখানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ডিবির ওয়ারী বিভাগ। এদের কেউ কাস্টমস কর্মকর্তা, কেউ পরমাণু বিজ্ঞানী, কেউ বা আবার মেজর পরিচয় দিয়ে প্রায় ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- বাশার মোল্লা (৫৩), শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু (৩৩), দ্বীন মোহাম্মদ (৪১), জুয়েল শিকদার (৪৬), মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ (৪০), শেখ আলী আকবর (৫৭), জামাল ফারাজী (৫৫), সোহেল শিকদার (৩০), বিল্লাল হোসেন (৩২) এবং শাহরিয়ার ইকবাল (২৫)। গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) সঞ্জিত কুমার রায়। তিনি বলেন, ভাটারা থানা ও বিমানবন্দর থানায় করা দুটি মামলা তদন্তকালে এক নারী ভুক্তভোগীর সন্ধান পাই। তিনি নিজে এই চক্রের ভুক্তভোগী। তিনি তার ভাটারা এলাকার দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে প্রতারক চক্রকে টাকা দিয়ে সর্বস্বান্ত হন। ওই ঘটনায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ চক্রের হোতাসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে নকল চারটি সোনার বার, সোনার বার তৈরির মেশিন, তামার তার, তার গলানোর কেমিক্যাল, হিউম্যান রাইটসের নকল আইডি কার্ড এবং সিভিল এভিয়েশনের নকল আইডি কার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতার বাশার মোল্লা নিজেকে কাস্টমস ডিরেক্টরের এপিএস হিসেবে পরিচয় দিয়ে কম দামে সোনার বার কিনে দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতেন। আর শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু নিজেকে কাস্টমস ডিরেক্টর অ্যাডমিন হিসেবে ক্রেতার সঙ্গে দেখা করে বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। দ্বীন মোহাম্মদ ও জুয়েল শিকদার স্বর্ণকার হিসেবে নকল সোনার বার তৈরি করেন। মোজাম্মেল খান নিজেকে কেমিস্ট ও পরমাণু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিতেন। শেখ আলী আকবর নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর হিসেবে পরিচয় দেন। জামাল ফারাজী, সোহেল শিকদার, বিল্লাল হোসেন এবং শাহরিয়ার ইকবাল উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে ক্রেতা জোগাড় করে তথাকথিত পরমাণু বিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে যেতেন। ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনার বার পরীক্ষা করে সঠিক আছে কিনা রিপোর্ট দেন কথিত ওই পরমাণু বিজ্ঞানী। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চক্রের সদস্যরা শুধু ভুয়া পরিচয়ই দেননি, তারা ভুয়া আইডি কার্ডও প্রদর্শন করতেন। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য তারা স্বনামধন্য হোটেলে পার্টির আয়োজন করেন। লাক্সারিয়াস প্রাইভেট কার ব্যবহার করে সেখানে যান। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানা, দক্ষিণখান থানা, উত্তরা পূর্ব থানা, কাশিমপুর থানা ও বাগেরহাটের ফকিরহাট থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর