শিরোনাম
রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

শেয়ারবাজারে টানা পতন

তিন সপ্তাহে সূচক কমেছে ২০০ পয়েন্ট

আলী রিয়াজ

কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা দরপতন চলছে ঢাকার শেয়ারবাজারে। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। তিন সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৯০ পয়েন্ট। টানা দরপতনের কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দৈনিক লেনদেনে। প্রতিদিনের লেনদেনে দেখা যায়, বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। বিশেষ করে ডলারের দর বেড়ে যাওয়া ও জ্বালানি সংকটের কারণে মানুষ লেনদেন করতে কিছুটা অনিশ্চয়তায় ভুগছে। তবে শেয়ার ধরে রাখলে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন বলে মন্তব্য করেছেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে সামান্য দরপতন হয়েছে। সব সূচকই কমেছে শেয়ারবাজারে। সূচকের সঙ্গে টাকার পরিমাণে লেনদেনও কমেছে। আর লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে বাজার মূলধন কমেছে ৪৫০ কোটি টাকা। এই সময়ে ডিএসইতে ৩ হাজার ৫৮৩ কোটি ৫২ লাখ ৯১ হাজার ৯৫৬ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ৮০১ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার ৪৬৫ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ২ হাজার ২১৭ কোটি ৭১ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৯ টাকা। সূচকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪.৩০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে। লেনদেনের পাঁচ দিনে দুই দিন সূচক বেড়েছে, কমেছে তিন দিন। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৮৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৭১টির। কমেছে ৮৪টির। দর অপরিবর্তিত ছিল ২২৯টির বা ৫৯.৬৩ শতাংশের  শেয়ার ও ইউনিট দর। অর্থাৎ সপ্তাহের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়নি।

ডিএসইতে আগের সপ্তাহেও দেখা যায় একই চিত্র। গত ১৬ থেকে ২০ অক্টেবর সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের  শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে তার তিন গুণের বেশি। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মাত্র ৪১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭১টির। আর ১৭৪টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। ওই সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহেও সূচক কমে ৭৫ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। সবকটি সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে গড় লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৬০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ২০৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। ডলারের দর, জ্বালানি সংকট নিয়ে সব দেশেই পরিস্থিতি খারাপ। বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে কর্তৃপক্ষের অদক্ষতার কারণে। তবে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হলেও এখনো বিনিয়োগকারীদের সামনে ভালো সম্ভাবনা আছে। সবার উচিত শেয়ার ধরে রাখা। শেয়ার ধরে রাখলে সবাই ভালো রিটার্ন পাবে। কর্তৃপক্ষের উচিত যেভাবে হোক বড় মূলধনী কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত করা। তাহলেই এসব পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সহজ হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর