রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

সিরাজগঞ্জে ক্ষতি ১২ হাজার হেক্টর ফসল

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে ক্ষতি ১২ হাজার হেক্টর ফসল

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সিরাজগঞ্জে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান রয়েছে। এ ছাড়া ৭ হাজার হেক্টর জমির সবজি, কালাই ও অন্যান্য ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এতে কৃষকেরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সামনে সরিষা আবাদ নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী গ্রামের কৃষক আবদুল হান্নান প্রায় ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার জমিটি নিচু। বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে অনেক পানি জমেছে। আধাপাকা ধান হয়তো দুই দিন পরই পচে যাবে।’

মাইজবাড়ী চরের বর্গাচাষি ছকিম মিয়া বলেন, ‘অনেক আশা করে জমি বর্গা নিয়ে ধান রোপণ করেছিলাম। বৃষ্টিতে আর বাতাসে সব ধানগাছ মাটিতে পড়ে গেছে। আমার এখন চাষাবাদের চালানই উঠবে না।’ তাড়াশের মাগুরা বিনোদ ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের কৃষক শাহাদত হোসেন বলেন, সরিষার আবাদ দেরিতে হলে বোরো ধান চাষও পিছিয়ে যাবে। নিচু এলাকায় দেরিতে চাষ করা বোরো ধান অনেক সময় আগাম বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর বলেন, সিত্রাংয়ের প্রভাবে জেলার ১২ হাজার হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এতে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কাজিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। বৃষ্টি ও বাতাসে ৩০ হেক্টরের মতো জমির ধান নষ্ট হতে পারে। তবে অন্যান্য ফসলের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ধানের জমি থেকে পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে যাবে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপজেলার প্রায় ২৫ হেক্টর জমির আমন ধানখেতের ক্ষতি হয়েছে। এতে ৪০-৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হতে পারে। ফসলের মাঠে পানি বাড়ায় সরিষা আবাদে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। এ সময় উপজেলায় ধানের চেয়ে সরিষার আবাদ বেশি হয়। তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার আট ইউনিয়নে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে। টরি-৭, বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭, বারি সরিষা-১৮ ও বিনা সরিষা-৯ আবাদ করা হয় এ অঞ্চলে। গত বছর বর্ষার পানি মাঠ থেকে আগাম নেমে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ হয়। এ বছর পানি এখনো না নামায় কিছুটা দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বলেন, যেসব জমির ধান পাকার পর পানিতে নুইয়ে পড়েছে সেগুলো দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। আর কাঁচা ধান বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সোজা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর