বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় ভাতিজার হাতেই খুন স্কুল শিক্ষিকা রুনা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা রোকশানা খানম রুনা (৫২) ভাতিজার হাতে খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যার ১২ ঘণ্টা পর ভাতিজা নওরোজ কবির নিশাতকে (২০) আটক করা হয়। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম নিশাতের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জানান, নিশাত একাই ঠান্ডা মাথায় ঘুমের মধ্যে শীল দিয়ে মাথায় পর পর দুটি আঘাত করে ফুফু রুনাকে হত্যা করে।

জানা যায়, সোমবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ডি-ব্লকের ২৮৫ নম্বর নিজ বাসার শয়নকক্ষের বিছানার ওপর থেকে রুনার লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। তিনি কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান শিশির যশোরের চৌগাছা এলজিইডির কমিউনিটি অর্গানাইজার পদে চাকরি  করেন। সপ্তাহান্তে তিনি কুষ্টিয়ায় আসতেন। পুলিশ সুপার জানান, নিশাত মূলত মাদকাসক্ত। আইপিএলসহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়ায়ও আসক্ত। সোমবার দুপুর ২টার দিকে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সদস্যরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিক্ষিকার আপন ভাতিজা নিশাতসহ ওই বাড়িতে ভাড়া থাকা আরও দুই যুবককে আটক করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় টানা প্রায় ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর নিশাত অকপটে ফুফু রুনাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। নিশাত স্কুল শিক্ষিকা রুনার আপন বড় ভাই মৃত এ কে এম নূরে আসলামের ছোট ছেলে। ফুফু রুনার ছয় তলা বাড়ির চার তলার একটি ফ্ল্যাটে মা এবং বড় ভাইয়ের সঙ্গে থাকত নিশাত। ২০১৩ সালে ভাইয়ের মৃত্যুর পর ভাইয়ের অসহায় পরিবারটিকে বিনামূল্যে ওই বাড়িতে থাকতে দিয়েছিলেন রুনা। কুষ্টিয়া সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ইনচার্জ আনিসুল ইসলাম জানান, নিজের কোনো সন্তান না থাকায় ছোটবেলা থেকেই পরম আদর-¯েœহ দিয়ে কোলে-পিঠে করে দুই ভাতিজা নিশাত এবং নির্ঝরকে বড় করেন রুনা। বড় ভাইয়ের মৃত্যুর কারণে তার দুই ছেলে এবং ভাবিকে সব সময় আগলে রাখতেন। আদরের ভাতিজা নিশাতকে কিছু দিন আগে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে একটি বাইকও কিনে দেন। নিশাত গত বছর এইচএসসি পাস করে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পাওয়ায় এ বছর আবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

সর্বশেষ খবর