শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল প্রান্তির লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর পুঠিয়ার হোসনে আরা প্রান্তি (২০) আত্মহত্যা করেননি। তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালানো হয়েছে। আর এ কাজটি করেছিলেন তারই স্বজনরা। ঘটনার আট মাস পর পুলিশ সেই রহস্য উদঘাটন করেছে। উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য তাকে হত্যা করা হয়।

পুলিশ জানায়, বাবা-মা, ভাই মিলে প্রায়ই শাসন করতেন প্রান্তিকে। একপর্যায়ে বাবা, মা ও ভাই মিলে প্রান্তিকে হত্যার পর লাশ বাড়ির বাইরের আমগাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার সকালে প্রান্তির বাবা হাসানুজ্জামান বাবু (৪৫), মা নাসরিন বেগম (৪০) ও ভাই নাসিমকে (১৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা সদরের গ-গোহালী গ্রামের অধিবাসী।

রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, এরই মধ্যে তারা প্রান্তির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আত্মহত্যা নয়, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। এর মধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রান্তির ভাই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

তবে এখনো তার বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

ওসি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা বলছেন, তাদের মেয়েটি বড় হওয়ার পর থেকে উগ্র জীবনযাপন করতেন। এ কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে মেয়েটি মারা যান। এরপর তার লাশ বাইরের আমগাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। যেন সবাই ভাবে আত্মহত্যা করেছেন। ৬ মার্চ পুলিশ তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ওই সময় এ ঘটনায় পুঠিয়া থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিল পুলিশ। প্রান্তি গত বছর পরিবারের অমতে পালিয়ে পৌর এলাকার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে জিয়ারুল ইসলামকে বিয়ে করেন। কিন্তু পালিয়ে বিয়ে করায় উভয় পরিবার তাদের বিয়ে মেনে নেয়নি। হত্যাকান্ডের কয়েক দিন আগে প্রান্তি বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। ৫ মার্চ রাতে বাবা, মা ও ভাই মিলে প্রান্তিকে হত্যা করে লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন। তবে সবাই ভাবে প্রান্তি আত্মহত্যা করেছেন।

সর্বশেষ খবর