শিরোনাম
শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও চিকিৎসা ব্যয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও চিকিৎসা ব্যয়

ভেজাল খাবারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বাহারি শরবত, রকমারি খাবারে ‘ফুড গ্রেড’র নামে ব্যবহার করা হচ্ছে কারখানায় ব্যবহৃত রং। দীর্ঘদিনের পোড়া তেলে চলছে হোটেল, রেস্টুরেন্টে রান্না। এসব রাসায়নিক উপাদানে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। কিডনি, লিভার, ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালের অধ্যাপক স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত চিকিৎসক মো. কামরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাইরে থেকে কেনা খাবারে বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর উপাদান মেশানো হয়। শরীরের জন্য ক্ষতিকর রং, প্রিজারভেটিভ, ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। মুখরোচক করার জন্য অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করা হয়। এসব উপাদান মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে। লিভারের সমস্যার পাশাপাশি কিডনির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এসব খাবার। অনেক উপাদান দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি করে এবং দুরারোগ্য রোগ জন্ম দেয়। তাই এসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। বাড়িতে স্বাস্থ্যকর উপায়ে বানানো খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়তে হবে। ব্যবসায়ীদেরও খাবারে ভেজাল দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ ভেজাল ও দূষিত খাদ্য গ্রহণের কারণে অসুস্থ হয়। এর মধ্যে মারা যায় ৪ লাখ ৪২ হাজার মানুষ। এ ছাড়া দূষিত খাদ্য গ্রহণজনিত কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সের আক্রান্ত হওয়া ৪৩ শতাংশ শিশুর মধ্যে মৃত্যুবরণ করে ১ লাখ ২৫ হাজার। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কারণে প্রতি বছর দেশে ৩ লাখ লোক ক্যান্সারে, ২ লাখ লোক কিডনি রোগে, দেড় লাখ লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া গর্ভবতী মা ১৫ লাখ বিকলাঙ্গ শিশুর জন্মদান করেন। ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে দেশে হেপাটাইটিস, কিডনি, লিভার ও ফুসফুস সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে চলেছে। ২০১৫ সালে দিনাজপুরে কীটনাশক মিশ্রিত লিচুর বিষক্রিয়ার আট শিশু এবং ২০১২ সালে ১৪ শিশুর প্রাণহানি ঘটে। সামগ্রিক বিষয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভেজাল খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে বাসা বাঁধে রোগব্যাধি। ক্ষতিকর রং, বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান, পোড়া তেল খাওয়ার ফলে পেটে সমস্যা হয়। ধীরে ধীরে আলসার হয় একটা সময় লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব খাবার খেলে হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হয়। গর্ভবতী নারীদের জন্য এসব ভেজাল খাবারের ক্ষতি কয়েকগুণ বেশি। গর্ভের শিশু মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভেজাল খাবারে। মাথার চুল, নখ থেকে শুরু করে মানুষের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে ভেজাল মেশানো খাবার। তাই ব্যবসায়ীদের বলব সততার সঙ্গে ব্যবসা করুন। খাবারে ভেজাল মিশিয়ে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবেন না।’

সর্বশেষ খবর