শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সেই চিকিৎসক জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. জাকির হোসেনকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

বুধবার বিকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ডা. জাকির নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রবাদী সংগঠন আনসার আল ইসলাম ও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের পাঠ্য ‘কাইজান’ সিরিজের লেখক বলে দাবি করেছে সিটিটিসি। এর আগে গত ৮ নভেম্বর থেকে ডা. জাকির নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করে তার পরিবার। এ ঘটনায় নিখোঁজের দুই দিন পর ১০ নভেম্বর ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মোহসিন উদ্দিন ফকির ভাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গতকাল এসব বিষয় জানিয়েছেন সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের এডিসি মো. আহমেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের ধারাবাহিক গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং তথ্যপ্রযুক্তির কার্যক্রমের মাধ্যমে জানতে পারি, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সাংগঠনিক এবং অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংঘবদ্ধ একটি গ্রুপ দাওরা কোর্স (প্রশিক্ষণ) পরিচালনা করছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে সংগঠনের সদস্যরা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার সময় নিরাপত্তাজনিত কারণে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে না।

ওই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন নজরদারির মাধ্যমে আরও তথ্য পাওয়া যায়, আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্যরা নতুন সদস্য সংগ্রহ করে তাদের সংগঠনের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অবগত করার জন্য প্রথমে অনলাইনে এবং পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে দাওরা কোর্স (প্রশিক্ষণ) কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিটিটিসি জানতে পারে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় ইব্রাহিম (সাংগঠনিক নাম) নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের একটি গ্রুপ একত্রিত হবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে সিটিটিসি অবস্থান নেয়।

তিনি জানান, বুধবার বিকালে সায়েদাবাদ দেওয়ান মোহাম্মদ সাইদুর রহমান চিশতী সায়েদাবাদী দরবার শরিফের মূল গেটের সামনে রাস্তার মাঝখানে ফ্লাইওভারের নিচে ৩ থেকে ৪ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তি দেখে তাদের দিকে এগোতেই পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় ডা. জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়। জাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে ১৫ জনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ছাড়া তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, ডা. জাকির নিজেকে আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেন। সংগঠনে তিনি ইব্রাহিম নামে পরিচিত। কাইজান সিরিজ তার নিজের লেখা একটি ব্লগ রয়েছে। আনসার আল ইসলামের সদস্যদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রশিক্ষণে ‘কাইজান সিরিজ’ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং সবাইকে এই ব্লগ পড়ার নির্দেশনা দেন। ডা. জাকিরকে গ্রেফতারের সময় বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেছে। বেশ কয়েকজনের নাম জানিয়েছেন ডা. জাকির।

সর্বশেষ খবর