মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আকস্মিক অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটে বিপাকে রোগী-স্বজনরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে আকস্মিক অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। হাসপাতাল থেকে লাশ বাড়ি নিতে পারছেন না তারা। তাদের অভিযোগ, বরিশালে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা নেই। রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে তারা। শৃঙ্খলা ফেরাতে শেরেবাংলা মেডিকেলের পরিচালকের এক নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু করেন অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা। বিষয়টি সমাধানে সিটি মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন হাসপাতালের পরিচালক।

বরিশালে রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্সের নির্ধারিত ভাড়ার কোনো তালিকা নেই। অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ অবস্থায় রোগী পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সম্প্রতি কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেন শেরেবাংলা মেডিকেলের পরিচালক। নির্দেশনায় রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্সের সিরিয়াল মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি। পরিচালকের এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকাল থেকে আকস্মিক ধর্মঘট শুরু করেন অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন রোগী ও স্বজনরা।

মো. সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, তার মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ৮টায় মারা যান। দুপুর পর্যন্ত মায়ের লাশ বাড়ি নিতে পারেননি অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটের কারণে।

আরেক রোগীর স্বজন মাহবুবুর রহমান জানান, বরিশালে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা নেই। রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন তারা। রোগী পরিবহনে বিভিন্ন গন্তব্যে ভাড়া নির্ধারণসহ শৃঙ্খলা ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন তিনিসহ অন্যরা। অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা শৃঙ্খলার কথা মুখে বললেও ভাড়ার  তালিকার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে তাদের। অ্যাম্বুলেন্স মালিক মো. মনির জানান, সব রোগীর কাছ থেকে একই হারে ভাড়া আদায় করা যায় না। রোগীর আর্থিক অবস্থা বুঝে ভাড়া আদায় করেন তারা। বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফিরোজ আলম জানান, ঢাকায় রোগী পরিবহনে ১০ হাজার টাকার কমে অ্যাম্বুলেন্স চালাবেন না তারা। অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালক সমিতির ধর্মঘটে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বিষয়টি সমাধানে সিটি মেয়রের সহায়তা কামনা করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকদের পেছনে অদৃশ্য শক্তি রয়েছে। তারা শৃঙ্খলা মানতে চান না। বিষয়টি স্থানীয় রাজনীতিবিদদের দেখা উচিত। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি রোধে হাসপাতাল এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। বিষয়টি সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) বিপ্লব কুমার মিস্ত্রি। প্রসঙ্গত, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দেড় শ থেকে দুইশ রোগী ভর্তি হয়। প্রতিদিন অর্ধশত রোগী প্রেরণ করা হয় ঢাকায়। এ ছাড়া গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জন রোগী মারা যায় এই হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা

সর্বশেষ খবর