শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ছেলেকে বেঁধে রেখে বাবাকে খুন করে ডাকাতি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

ফতুল্লার ধর্মগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিমকে শ্বাসরোধে হত্যা শেষে তার ঘর থেকে নগদ ২০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাওলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম (৭২) মাওলাবাজার এলাকার মৃত মহব্বত আলীর ছেলে। গতকাল সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।

নিহতের ছেলে হাফেজ মো. মাসুদ জানান, পরিবারের লোকজন মঙ্গলবার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে তার বাবা নিজ রুমে ও তিনি তার রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত প্রায় ১১টার সময় তিনি ঘুমে থাকা অবস্থায় তিনজন লোক তার হাত, পা ও চোখ বেঁধে তাকে মারধর করে। তার বাবার রুমে কয়জন দুর্বৃত্ত ছিল তা তিনি ধারণা করতে পারছেন না। তবে দুর্বৃত্তরা রাত ২টায় যাওয়ার সময় জমি বিক্রির ২০ লাখের বেশি টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা কীভাবে রুমে প্রবেশ করেছে তা বলতে পারেন না মাসুদ।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এসআই হুমায়ুন কবির জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বোঝা যাবে মৃত্যুর কারণ। তবে যে ঘরে ঘটনা ঘটেছে সে ঘরে বাইরে থেকে ভিতরে প্রবেশ করার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। ঘরটিতে চারটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবে ক্যামেরার মেশিন থেকে হার্ড ডিক্স খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

নিহতের ছোট মেয়ে নুরুননেছা জানান, রাত আড়াইটার দিকে তাদের ভাড়াটিয়ার মেয়ে তাকে ফোন করে জানায়, তাদের বাসায় ডাকাতি হয়েছে। তার ভাইকে হাত-পা বেঁধে, মারধর করে টাকা-স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে এবং তার বাবা কোনো কথা বলছে না। সংবাদ পাওয়ার পরপর তিনি ধর্মগঞ্জের বাসায় ছুটে আসেন। তিনি আরও জানান, বাসায় ২০ লাখ টাকা ছিল। সে টাকা নিয়ে গেছে। বাড়ির কাজ করার জন্য ব্যাংক থেকে মাসখানেক আগে এই টাকা উত্তোলন করা হয়েছিল বলে তিনি জানান।

পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া মাহিনুর বেগম জানান, তার স্বামী কাঁচামাল ব্যবসায়ী। প্রতিদিন রাত ২টার দিকে তিনি কাঁচামাল সংগ্রহে বাসা থেকে বের হন। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তার ঘুম ভাঙলে তিনি বাড়িওয়ালার ঘরের দরজায় ঠাস ঠাস শব্দ এবং গোঙানির শব্দ শুনতে পেয়ে তার স্বামীকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলে দেখতে পান বাড়িওয়ালার ফ্ল্যাটের প্রধান ফটক খোলা। তিনি ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পান বাইরে থেকে রুমের ভিতর প্রবেশ করার দুটি দরজা থেকে আটকানো। তখন তিনি বাইরের দরজার সিটকিনি খুলে দেখতে পান গামছা দিয়ে বাড়িওয়ালার ছেলে হাফেজ মাসুদের হাত-পা বাঁধা এবং অপর একটি কাপড়ের টুকরো দিয়ে তার মুখ বাঁধাবস্থায় তিনি ফ্লোরে পড়ে আছেন। তখন তিনি তার হাত-পা ও মুখের বাঁধন খুলে দেন। পাশের রুমে গিয়ে দেখতে পান বিছানার ওপর পড়ে আছে বাড়িওয়ালার লাশ।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রিজাউল হক বলেন, নিহতের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। মেয়েরা স্বামীর বাড়ি থাকেন। ছেলের পরিবারের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম নিজ বাড়িতে থাকেন। ঘটনার সময় ছেলে ও আবদুল হালিম ছাড়া কেউ বাড়িতে ছিলেন না। ঘটনাটি রহস্যজনক। গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে।

সর্বশেষ খবর