শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইউএনওর ওপর হামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি

আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গার মালিকানা নিয়ে বিরোধজনিত সহিংসতায় বৃহস্পতিবার মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিকুর রহমান চৌধুরীর ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় আনসার সদস্যসহ সাতজন আহত হয়েছেন। তাদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। দুপুর দেড়টার দিকে ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী জানান, নিশ্চিন্তপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্প করার জন্য একটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়। জায়গাটি বিএস রেকর্ডে সরকারি খাস হলেও আরএস রেকর্ডে ব্যক্তিমালিকানাধীন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের বিরোধ চলে আসছিল। এলাকার মহিলারা ওই জমির মালিকানা তাদের দাবি করে বৃহস্পতিবার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছিলেন। খবর পেয়ে ইউএনও সেখানে যান। তাঁর সঙ্গে যাওয়া আনসার সদস্যরা নারীদের কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ধস্তাধস্তি হয়। আনসাররা রাইফেলের বাঁট দিয়ে কয়েক নারীকে আঘাত করেন। এতে এক নারী আহত হন। পরে নারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গাছের ডাল ভেঙে আনসারদের ওপর হামলা চালান। এ সময় স্থানীয়রা মাইকে ঘোষণা দেন তাদের ওপর হামলা হয়েছে। পরে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় ইউএনও ও কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। ওই সময় আনসার সদস্যরা শটগানের তিন-চারটি গুলি ছোড়েন। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে মধুখালী থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ডুমাইন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি একটি সালিশে ছিলেন। তিনি জানতেন না ইউএনও ওই এলাকায় এসেছেন। পরে ইউএনওর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি জমি দখল করে রেখেছিলেন। আমরা সেই জমি উদ্ধার করি এবং সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করি। ঠিকাদার সেই জায়গায় শেড নির্মাণ করেন। বুধবার রাতে স্থানীয়রা সেই শেড ভেঙে ফেলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।

খবর পেয়ে সেখানে গেলে আমার ওপর হামলা চালানো হয়।’ সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর জানান, পুলিশের একটি টহলদল ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ইউএনওর বাঁ চোখে আঘাত লেগেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেলাই করে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি খাসজমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তোলার জন্য ঠিকাদার সেখানে কাজ করছিলেন। বুধবার রাতে ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘরের কাজ করার সময় ঠিকাদারকে স্থানীয়রা মারধর করেছেন। এ বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনও ঘটনাস্থলে যান। হামলায় ইউএনও, পাঁচ আনসার সদস্য ও ঠিকাদার আহত হন। ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। এদিকে ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর