শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

কুমিল্লায় মেয়র পদে বাহারকন্যা সূচনাকে আওয়ামী লীগের সমর্থন

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র পদে উপনির্বাচনে মহানগরী আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলেন আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপির মেয়ে তাহসিন বাহার সূচনা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত কুমিল্লা মহানগরী আওয়ামী লীগের জরুরি বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূচনা মহানগরী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

সূত্র জানান, বর্ধিত সভার সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার জানতে চান, কারা কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থী হতে চান। প্রথমে হাত তোলেন আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামল ভট্টাচার্য। কুমিল্লা মহানগরী আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম নিজের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘হাউস চাইলে ভাতিজি তাহসিন বাহার সূচনাকে সমর্থন দেব।’ তখন নেতা-কর্মীরা সূচনার নামে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সেলিম বলেন, ‘ভাতিজিকে সমর্থন করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলাম।’ শ্যামল ভট্টাচার্যও সূচনাকে সমর্থন দেন। এরপর মহানগরী আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার তাঁর মেয়ে সূচনার হাত তুলে ধরে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।

তাহসিন বাহার সূচনা বলেন, ‘গত দুই নির্বাচনে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছি। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আরও কাছে যেতে পেরেছি। যারা আমার বাবার সঙ্গে রাজনীতি করেন তারা আমাকে সমর্থন দিয়ে কৃতজ্ঞ করেছেন।’আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ‘আমার মেয়ে হিসেবে তার কথা বলছি না। তার ধমনিতে আমার রক্ত আছে, তাই আমি বিশ্বাস করি সে আমার মতোই জনগণের জন্য কাজ করবে। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই সূচনাকে ঠেকাতে পারে, কারণ সবার সমর্থন তার সঙ্গে।’

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৫ জুন কুসিকের তৃতীয় নির্বাচনে আরফানুল হক রিফাত মেয়র নির্বাচিত হন। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়র রিফাত মারা যান। উপনির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি। যাচাইবাছাই ১৫ ফেব্রুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তি ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ ফেব্রুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ ফেব্রুয়ারি। ভোট গ্রহণ ৯ মার্চ। কুমিল্লা সিটির ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার।

সাক্কু ভেবেছে সীমা আর সে মিলে লুইট্টা খাবে : মহানগরী আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বক্তৃতাকালে বাহাউদ্দিন বাহার কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে চোর-লুটেরা অভিহিত করে বলেছেন, ‘গত সংসদ নির্বাচনে সীমা ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছিল। তখন সাক্কু ভেবেছিল সীমা (প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা সংসদ নির্বাচনে বাহারের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন) এমপি হলে সে মেয়র হবে।’ বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ‘সাক্কু ভেবেছিল সীমা জয়ী হওয়ার পর তারা দুই ভাইবোন মিল্যা, কুমিল্লাকে লুইট্টা খাবে। কিন্তু আপনারা তা হতে দেননি। ওপরে আল্লাহ আছে, আগামীর মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা। আমার মেয়ে বলে বলছি না। তার ধমনিতে আমার রক্ত। সে কখনো অসৎ হতে পারে না। আপনারা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পৃথিবীর কোনো শক্তি তাকে হারাতে পারবে না।’ সংসদ নির্বাচনে ১৫২ কেন্দ্রের কর্মীরা বাহারের পক্ষে কাজ করেছেন। তাঁর বিশ্বাস, ওই ১৫২ কেন্দ্রের কর্মীরা এবার ১০৫ কেন্দ্রে তাঁর মেয়ে সূচনার পক্ষে কাজ করবেন। সদর আসনে ছয় ইউনিয়ন পরিষদসহ ১৫২ কেন্দ্র, সিটিতে ১০৫। বাহার জানান, তিনি টাকাপয়সা না আনলে সিটি করপোরেশনে কোনো কাজ হতো না। কিন্তু কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত লোক মানুষের হক খেয়ে ফেলেছে। তিনি মরে গেলে কুমিল্লার উন্নয়ন হবে না। বাহার বলেন, ‘অনেকে বলে সাক্কু ভাই ক্যানডিডেট! সে ক্যানডিডেট না, সে চোর-লুটেরা। কেন আপনারা তাকে চুরির সুযোগ দেবেন? তাকে জেলে যেতে হবে। মানুষের হক মেরে খাওয়ার সুযোগ সে পাবে না।’ এসব বিষয়ে সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘বাহার সাহেবের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি উগ্র আচরণ করছেন। আমি দুর্নীতি করলে আইন আছে। তিনি রাস্তাঘাটে মাইকিং করার কে?’ প্রসঙ্গত, কুমিল্লা সিটি মেয়র আরফানুল হক রিফাত ১৩ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাই মেয়র পদে ৯ মার্চ উপনির্বাচন।

 

 

 

সর্বশেষ খবর