শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ট্রাফিক পুলিশের ৮৪ শতাংশ

মাহবুব মমতাজী

শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ট্রাফিক পুলিশের ৮৪ শতাংশ

রুহুল আমিন (ছদ্মনাম), তিনি রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেন। ১০ বছরের চাকরিজীবনের শুরুতে জেলায় কাজ করার পর চার বছর আগে বদলি হয়ে আসেন ঢাকায়। দিনের লম্বা সময় ধুলাবালি আর রোদ-বৃষ্টির মধ্যে সড়কে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন তিনি। তার ভাষ্য, চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই কাশির কিছু সমস্যা ছিল। তবে ঢাকায় আসার পর এ সমস্যা বহুগুণ বেড়ে গেছে।

এসব সমস্যার কারণ জানতে ২০২১ সালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা ৩৮৪ জন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে একটি গবেষণা হয়। ‘ট্রাফিক এয়ার পলিউশন অ্যান্ড রেসপিরেটরি হেলথ : অ্যা ক্রস-সেকশনাল স্টাডি অ্যামং ট্রাফিক পুলিশ ইন ঢাকা সিটি (বাংলাদেশ)’ শীর্ষক গবেষণাটি হয়। এ গবেষণার তথ্য বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দায়িত্ব পালনরত ৮৪ শতাংশ ট্রাফিক পুলিশই শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। গবেষক দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে ছিলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) রিসার্চ ফিজিশিয়ান ডা. সাকিলা ইয়াসমিন। জানা গেছে, গবেষণাটি চালানোর সময় রাজধানীর মহাখালী থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। তাদের কাছ থেকে কাশি, কফ, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা বন্ধ থাকা ও শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে এসব তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়- অধিকাংশ পুলিশ সদস্যই শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন। গবেষক দল ট্রাফিক পুলিশের সাক্ষাৎকার গ্রহণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সড়কের মোড়গুলোয় বাতাসে পিএম ২.৫ ও পিএম ১০-এর মাত্রা পরিমাপ করে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব এলাকায় পিএম ২.৫ ও পিএম ১০-এর মাত্রা বেশি, সেসব এলাকার ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভোগার হারও বেশি। আর পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলার শুরুতে, মাঝখানে ও শেষে সাক্ষাৎকারস্থলের পিএম ২.৫ ও পিএম ১০-এর মাত্রার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে তা গড় করে স্থানগুলোর বাতাসের মান নির্ণয় করা হয়েছে। বায়ুদূষণের কারণে তৈরি হওয়া শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ধূমপায়ী ও অধূমপায়ী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে প্রায় একই। ধূমপায়ী ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভোগার হার ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আর অধূমপায়ীদের মধ্যে এ হার ৮৩ দশমিক ২ শতাংশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, দিনের দীর্ঘ একটি সময় ধরে রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে হয় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।

একদিকে রোদ-বৃষ্টি, অন্যদিকে বাতাসের দূষণ। এমন পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে শ্বাসতন্ত্রের নানা সমস্যায় ভুগতে হয় তাদের।

সর্বশেষ খবর