দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনটির গেট থেকে শুরু হয়ে আন্ডার গ্রাউন্ড, নিচতলা, দ্বিতীয় তলাসহ পুরো ভবনটি আগুনে পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সার্ভার, ইমারজেন্সি কল সেন্টার, বিদ্যুতের সাব স্টেশন, ৫৮টি গাড়িসহ অনেক দামে কেনা যন্ত্রাংশ পুড়ে ছাই হয়েছে। পুরো ভবনটি কঙ্কাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষতি নিরূপণ না করলেও হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া দুর্যোগ ভবনের পাশের বিল্ডিংয়ের পরে অবস্থিত ডেটা সেন্টারের সংযোগ তারগুলো পুড়ে গেছে। ফলে বন্ধ রয়েছে ডেটা সেন্টারও।
জানা গেছে, দেশজুড়ে চলা কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংস রূপ নেয় গত বৃহস্পতিবার। ওই দিনই বিকাল পৌনে ৫টার দিকে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করা হয়। এরপর ভবনের সামনে থাকা গাড়িগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতকারীরা। তখন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো ভবন। তখন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভয়ে ছাদে উঠে যান। আগুনের লেলিহান বাড়তে থাকায় তারা মই দিয়ে পাশের ভবনে চলে যান। কয়েকজন আহত হলেও সবাই নিরাপদে পাশের ভবনে গিয়ে রক্ষা পান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুর্যোগ ভবনের সামনে রাস্তার পাশে থাকা ছয়টি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কার পুড়ে কঙ্কাল হয়ে পড়ে আছে। ভবনের সামনে থাকা অন্তত ১৫টি গাড়ি ও বেজমেন্টে থাকা ৩০টির বেশি গাড়ি আগুনে পুড়েছে। সব মিলিয়ে ৫৮টি গাড়ি পুড়ে গেছে। নিচ তলায় থাকা ৪০০ কোটি টাকার সার্ভার (ডেটা সেন্টার) আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। একই সঙ্গে দুর্যোগের ইমারজেন্সি রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আনসার ক্যাম্প ও বিদ্যুতের সাব স্টেশন পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এ ছাড়া পানি সরবরাহ লাইন, ইন্টারনেট সংযোগ, জানালার গ্লাস, টাইলস, ল্যান্ডফোন ও ভবনে থাকা এসিগুলো পুরোপুরি পুড়ে গেছে। সৌদি সরকারের অনুদানে দেওয়া চারটি কাভার্ড ভ্যান পুড়ে গেছে। দুটি লিফটের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পুড়ে গেছে।এ ছাড়া ভবনটির দ্বিতীয় তলায় থাকা কনফারেন্স রুম, মহাপরিচালকের দপ্তর, প্রশাসন ও হিসাব বিভাগে থাকা ডকুমেন্টসসহ সব যন্ত্রাংশ পুড়ে গেছে। তৃতীয় তলায় যানবাহন শাখা, ত্রাণ ও কাবিখা শাখা রয়েছে। এই ফ্লোরের কম্পিউটারসহ সব যন্ত্রাংশ পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে পুরো ১০ তলা ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে ভবনটি এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী বলেন, ৪টি কাভার্ড ভ্যানসহ ৫৮টি গাড়ি পুড়ে গেছে। ভবনের নিচতলায় ডেটা সেন্টার (সার্ভার) রুম, বিদ্যুতের সাব স্টেশন, আনসার ক্যাম্পসহ পুরো ভবন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের পরিচালককে (প্ল্যানিং) আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট হাতে পেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে। তবে ধারণা করছি- ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।