ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে দুই কন্যা সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকাল ১১টার দিকে পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়পাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন বিজয়পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া (৩২), তার স্ত্রী জান্নাতুল ইসলাম (২২), বড় মেয়ে ফারিহা আক্তার (৪), ও ছোট মেয়ে ফাহিমা আক্তার (২)। নিহত সোহাগ মিয়া বিজয়পাড়ার আমির মিয়ার ছেলে। পুলিশ নিহতদের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোহাগ মিয়ার নবীনগরের নিউ মার্কেটে রঙ্গমেলা বস্ত্রালয় নামে ব্যবস্থাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে পৌর এলাকার বিজয়পাড়ায় নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। পারিবারিক কলহ ছিল না। তবে সম্প্রতি ছোট ভাইকে প্রবাসে পাঠাতে ও ব্যবসায়িক কারণে সোহাগ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। আর সৎ মায়ের পাওনা ১ লাখ টাকা নিয়ে প্রায় সময়ই বিত া হতো। এসব বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন সোহাগ। এদিকে একসঙ্গে পরিবারের চারজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ঘরে চারজনের লাশ পাওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মৃত সোহাগ মিয়ার মা জুবেদা খাতুন বলেন, শনিবার রাত ১০টায় আমার ছেলে, ছেলের বউ, নাতনিরা খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে পড়ে। ওরা আলাদা ঘরে থাকায় রাতে আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি।
মারা যাওয়া জান্নাতুলের মা মনো বেগম বলেন, রবিবার সকালে তার মেয়ে, জামাতা ও নাতনিরা ঘুম থেকে না ওঠায় সন্দেহ হয়। তিনি ঘরের দরজা খোলার জন্য ডাকাডাকি করলেও ঘরের ভিতর থেকে কারও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। সাড়াশব্দ না পাওয়ায় চিৎকার শুরু করি। চিৎকার শুনে প্রতিবেশী উজ্জ্বল মিয়ার সহযোগিতায় বসতঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখি ঘরের চৌচালার টিনের ঘরের আড়ার সঙ্গে মেয়ে, দুই নাতনি ও জামাতার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এদিকে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্থানীয়দের ধারণা, সোহাগ মিয়া পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। ফলে ঋণগ্রস্ত থাকতে পারেন তিনি। নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুব আলম বলেন, লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা। তবে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে জানা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।