আতঙ্কের শহর গোপালগঞ্জ। একসময় আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রচারণা বেশি ছিল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর গোপালগঞ্জ জেলাজুড়ে অজানা আতঙ্ক শুরু হয়। গতকাল টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ, আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া গতকাল দুপুর ২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমর্থক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত এক হয়ে গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালাবে- এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে।
মুহূর্তের মধ্যেই শহরের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। শহরের চৌরঙ্গি, কাঁচা বাজার, পৌরসভা ও ২৫০ বেড জেনারেল হাসপাতালে হামলা সংঘর্ষ হয়েছে বলে আতঙ্কিতরা প্রচার করেন। অনেকে দিকবিদিক ছোটাছুটি করেন। মুহূর্তের মধ্যে শহরে অফিস আদালত, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। শান্ত গোপালগঞ্জ অশান্ত করতেই কৌশলে এ গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী এসএম মাহাবুব আলী, শেখ আলী হোসেন জানান। দুপুর ২টা ৫ মিনিটে শহরের থানাপাড়ায় দুই মহিলাকে দৌড়াতে দেখা যায়। তারা জানান, চৌরঙ্গিতে মারামারি হচ্ছে। তাই আতঙ্কিত হয়ে তারা বাড়ি যাচ্ছেন। পরে ২টা ১০ মিনিটি শহরের মা মনসা বস্ত্রালয়ের মালিক অলোক সাহা ও অজয় সাহার সঙ্গে দেখা হয় ডিসি রোডে। তারা বলেন, লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করছে তাই মুহূর্তের মধ্যে তাড়াহুড়া করে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। শহরের বিভিন্ন জায়গায় গন্ডগোল হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। গুজবের বিষয়ে জানতে শহরের কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে সব দোকান বন্ধ। আতঙ্কিত ব্যবসায়ী আবদুর রহিম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের মিছিল আসবে ভাঙচুর হতে পারে তাই দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছি। তবে সেখানে কোনো হামলা, ভাঙচুর বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি বলে জানান ওই দুই ব্যবসায়ী। পরে চৌরঙ্গি, পৌরসভা এলাকা ও হাসপাতালে গিয়েও হামলা, ভাঙচুর বা সংঘর্ষের কোনো সত্যতা মেলেনি। গোপালগঞ্জবাসীর ভীতি দূর করতে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। আওয়ামী লীগ নেতারা যে কোনো পরিস্থিতি সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য জেলাবাসীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।