ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ভবিষ্যতে কমপক্ষে আরও তিনটি সংসদ নির্বাচন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার প্রস্তাব দিয়েছে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। একই সঙ্গে সংবিধান সংশোধনসহ রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার দাবিও জানিয়েছে সুজন। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেশের সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারসহ ১৯টি প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলানয়তনে ‘রাষ্ট্র সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
বক্তব্য রাখেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সহসম্পাদক জাকির হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এবং সুজনের একরাম হোসেন।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বাভাবিকভাবেই সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। কিছু কাজ আছে জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। পাশাপাশি মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জের বিষয়ও মাথায় রাখতে হবে। সংস্কারের জন্য সুদূরপ্রসারী কতগুলো পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলাপ করে আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি নাগরিক সনদ প্রণয়ন করতে হবে।
সংবিধান সংশোধনীর বিষয়ে সুজন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য টার্ম লিমিটি নির্ধারণ, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা, সংসদের এক-তৃতীয়াংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণ এবং সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন, সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে আসন বণ্টন ব্যবস্থা প্রবর্তন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার করা, রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের প্রস্তাব করেছে। এ ছাড়া সুজনের প্রস্তাবের মধ্যে সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক ও জনকল্যাণমুখী করাসহ নিবন্ধনের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, নারীর প্রতি বৈষম্য, পরিচয় ভিত্তিক বিদ্বেষ ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার পরিহার করার শর্তারোপের প্রস্তব করে সুজন।
সুজনের ১৯ দফা প্রস্তাবের মধ্যে আরও রয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন ও নির্বাচনি আইনের সংস্কার, দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, সংসদের কার্যকারিতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা, রাজনৈতিক দলের সংস্কার ইত্যাদি।