নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা সম্পন্নে নিরাপত্তা এবং তিন দিন ছুটির দাবি করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট নেতারা। গতকাল সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শক্তভাবে সুপারিশ করা হবে, দুর্গাপূজায় ছুটি তিন দিন না হলেও যাতে কমপক্ষে দুই দিন হয়। দুর্গাপূজায় দুই বা তিন দিন ছুটি দিতে অসুবিধা কী? এই ছুটি তো শুধু তাদের জন্য নয়।’ বর্তমানে দুর্গাপূজায় এক দিন সরকারি ছুটি থাকে।
বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব পলাশ কান্তি দে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টার সঙ্গে এখন পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আমরা অত্যন্ত খুশি এবং সন্তুষ্ট। যেহেতু অক্টোবরে দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার আগে এবং পরে গত ২৪ বছরে কোনো পূজা হিন্দুরা শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারেনি। দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুরের মধ্য দিয়েই আমাদের পূজা শুরু করতে হয়। এসব বিষয়ে কথা বলেছি। এবার মন্ত্রণালয় কঠোরভাবে এসবের মনিটরিং করবেন। দুর্গাপূজায় ছুটি তিন দিন করা যায় কি না সেটা এবার থেকে তারা দেখবেন। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সরকারের আমলেই সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। আমরা আশা রাখি বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হবে না।
তিনি বলেন, বিগত কয়েক দিনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তারা সবই অবগত রয়েছেন। তারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন ও বলেছেন, যেখানে যেখানে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনবেন। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ওপর একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করার অনুরোধ জানিয়েছি। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ঢাকার সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায় বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্বে যিনি আছেন, তার সঙ্গে আমরা পরিচিতির জন্য এসেছি। আমাদের কথাগুলো সহানুভূতির সঙ্গে শুনেছেন। তিনি বলেছেন, তারা যত দিন কাজ করবেন, তত দিন এই বিষয়টা উন্নত থেকে উন্নততর অবস্থায় নিয়ে যাবেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিন্দু মহাজোট নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা সংখ্যালঘু নন। আপনারা এ দেশের নাগরিক এবং বাংলাদেশি। নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে কেন সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন হতে যাবেন।
হিন্দু মহাজোট নেতাদের দাবিগুলোকে সম্পূর্ণ যৌক্তিক উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তাদের দাবির যেগুলো এখনই ক্যাবিনেটের মাধ্যমে পূরণ করা যায়, সেগুলো করার চেষ্টা করা হবে। আর যেগুলো করতে সংসদ লাগবে সেগুলো তো আর এখন সম্ভব নয়। আসন্ন দুর্গাপূজায় নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশসহ বিজিবিকে বলা হয়েছে, নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার তারা সেটাই করবেন। এখানে দুই, তিন, চার স্তর বলতে কিছু থাকবে না। যতটুকু নিরাপত্তা দরকার ততটুকু নিরাপত্তা তাদের দেওয়া হবে। চাই না তৃতীয় কোনো পক্ষ সুযোগ নিক। এখানে কোনো ধর্মভিত্তিক মারামারি হয় না। যেটা হয় সেটা হচ্ছে দখলবাজির জন্য। আমরা তাদের কথা দিয়েছি, এ পর্যন্ত যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো খুঁজে বের করব।