বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, অর্থ পাচারকারীদের এখন আর টাকার বালিশে ঘুমাতে দেওয়া হবে না, শান্তিতে থাকতে পারবেন না। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে পর্ষদ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। আহসান এইচ মনসুর বলেন, শুধু সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক একা নয়, আন্তর্জাতিক মহলের সহায়তা নিয়ে অর্থ পাচারকারীদের ধরতে হবে। আমরা এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করব, যারা টাকা নিয়ে গেছে তারা যেন কষ্টে থাকে। তারা টাকার বিছানায় বালিশ দিয়ে যেন না ঘুমাতে পারেন, এ ব্যবস্থা করব। একটু দৌড়াদৌড়ির মধ্যে থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন এখন কিছুটা সহায়ক আছে, এটাকে কাজে লাগাতে হবে। টাকা আসুক আর না আসুক তাদের কষ্টে রাখব।
এর আগে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, রিজার্ভ সংকট আছে, সংকট ওভারনাইট যাবে না। এটা আমরা দেখব। আমি এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকে যাইনি। আমাদের হিসাব করতে হবে, আমরা কতখানি সাপ্লাই দিতে পারি বাজারে। আমাদের যেটুকু মিনিমাম সেটুকু রাখতে হবে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কাজই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। সুতরাং এই দায়িত্ব আমরা চাই বা না চাই আমাদের ঘাড়ে আসবেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সফলতা বা ব্যর্থতা আন্তর্জাতিকভাবে দুটো বিষয়ের ওপর নির্ধারণ করা হয়। প্রথমটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণ এবং দ্বিতীয়টি রিজার্ভের অবস্থান। এগুলো গুরুত্ব দিতে হবে। যেহেতু এখন মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী অপরদিকে রিজার্ভ নিম্নমুখী অবস্থায় আছে, তাই এই দুটোকে সমন্বয় করে আমাদের নীতিনির্ধারণ করতে হবে। যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সূচক দুটিকে মাঝামাঝি অবস্থায় আনতে পারি। তবে রিজার্ভ বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমদানির বিষয়ও নজর দিতে হবে। আমদানি-রপ্তানি সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, খুব সাবধানে হাঁটতে হবে। কিন্তু হাঁটতে হবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমি আশা করি এগুলো করা যাবে। এগুলো করা খুবই সম্ভব। আমরা আমাদের যে ডেভেলপমেন্ট পার্টনার আছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। কীভাবে রিজার্ভকে আরেকটু বাড়ানো যায়। সব মিলিয়ে চেষ্টাটা হবে এবং ইনশা আল্লাহ কয়েক মাস পর ফল দেখা শুরু করব। গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং খাতে সংস্কার তো করতেই হবে। এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন কীভাবে করতে হবে সেটা সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বসবে এবং আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ করব। আলাপ করে একটা রোডম্যাপ করতে হবে। সময়ের সঙ্গে আপনারা জানতে পারবেন। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্মের ক্ষেত্রে মার্জার আসতে পারে, রি-ক্যাপিটালাইজেশন আসতে পারে, পলিসি চেঞ্জ আসতে পারে। এগুলো অপশন। কোথায় কোন ব্যাংকের ক্ষেত্রে কীভাবে, সেটা ক্ষেত্র বুঝে করতে হবে।