শিক্ষার্থী ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদারকিতে বাজারে কমতে শুরু করেছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম। দোকানে দোকানে ১০ থেকে ২০ টাকা লাভসহ শিক্ষার্থীরা টানিয়ে দিয়েছে দামের তালিকা। করছে তদারকি। এতে মাছ মুরগিসহ কমেছে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম। মুরগির দাম ব্রয়লারে কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা আর সোনালিতে কমেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সবজিতে কমেছে ১০ থেকে ২০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, সবজি ব্যবসায়ীদের কিছু ‘হিডেন কস্ট’ ছিল। কয়েক দিন ধরে তা দিতে হচ্ছে না তাদের। সে জন্য দাম কমছে। এভাবে সরকারের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে গেলে বাজার পরিস্থিতি ইতিবাচক থাকবে।
কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া যায়। খিলক্ষেত বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীদের টিম বাজার তদারকি করছে। নিত্যপণ্যের দাম টানিয়ে রাখার জন্য বলেছে। আমরা এখন কম লাভে পণ্য বিক্রি করছি। এ ছাড়া সড়কে এবং দোকানে চাঁদাবাজি কমায় পণ্যের দাম কমেছে। আগে দিনে আমাদের দুই ভাগে চাঁদা দিতে হতো। সকালে পাইকারির জন্য ৭০০ টাকা করে দিতে হতো। আর বিকালের খুচরা দোকানের জন্য প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে দিতে হতো। এখন আর এ ধরনের হিডেন খরচ নেই।
এ বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. শফিকুল বলেন, বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা। আর লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা। শিক্ষার্থীরা আমাদের দোকানে দামের তালিকা টানিয়ে দিয়েছেন। আমরা এ খিলক্ষেত বাজারে ১০ থেকে ১২ টাকা লাভে মুরগি বিক্রি করছি। এর থেকে কম বেশি বিক্রির সুযোগ নাই। এখন সোনালি মুরগির দাম ২ সপ্তাহ আগেও ২৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন প্রায় সব পণ্যের দাম কমেছে। কয়েকদিন আগে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রায় ২০০ টাকা ছিল। এখন ১৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০, করল্লা ৬০ থেকে ৮০, চিচিঙা ৪০ টাকা থেকে ৬০, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০, কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০, কচুরমুখি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। চালকুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। শাকের মধ্যে লালশাক প্রতি আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা। কলমি ১০ থেকে ১৫ টাকা। পুঁইশাক প্রতি আঁটি ৩০ টাকা। পাটের শাক ৩০ টাকা। ১০ টাকা কমে হাইব্রিড পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে, দেশি পিঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। চায়না ও দেশি আদা ২৮০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা এবং দেশি রসুন ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে চাষের রুই ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১৫০০ টাকা, পাঙাশ ১৬০ থেকে ২১০ টাকা, মাগুর ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, কই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।