বাংলাদেশে শতভাগ রপ্তানির জন্য নির্মিত আদানি গ্রুপের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ভারতেও বিক্রির সুযোগ রেখে বিদ্যুৎ রপ্তানি বিধি সংশোধন করেছে ভারত সরকার। আকস্মিকভাবে দেশটি এর বিদ্যুৎ রপ্তানি আইনে সংশোধন এনেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য নির্মিত ঝাড়খন্ডের গড্ডায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরো বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানির বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। আর এর ঠিক এক সপ্তাহ পরই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার।
১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল গড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘিরে বাংলাদেশের স্বার্থ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে বিভিন্ন সময় অভিযোগ ওঠে। আদানির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির বিরোধিতাকারীরা তখন বলেছিলেন, ২৫ বছর মেয়াদি এ চুক্তির মাধ্যমে মুনাফা বাড়িয়ে তোলার বিশেষ সুযোগ নিয়েছে ভারতীয় কোম্পানিটি।
গতকাল আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, এ আইন সংশোধনের ফলে তা আদানি পাওয়ার এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) মধ্যে বিদ্যমান বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিকে (পিপিএ) প্রভাবিত করে না। আদানি পাওয়ার পিডিবির চাহিদা এবং পিপিএ’র বিধান অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে ১ ইউনিটের মাধ্যমে গতকাল সর্বোচ্চ ৭৬৯ দশমিক ৭৬ মেগাওয়াট ও গড়ে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আদানি পাওয়ার। এর আগে কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৩ আগস্ট আদানির একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গৌতম আদানির মালিকানাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে। যদিও পিডিবির সঙ্গে আদানি গ্রুপের চুক্তিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই বাংলাদেশে রপ্তানির শর্ত ছিল। তবে মোদি সরকার দেশটির বিদ্যুৎ রপ্তানি বিধিতে সংশোধন আনায় আদানি গ্রুপের গড্ডার বিদ্যুৎ ভারতের বাজারে সরবরাহে আর কোনো বাধা থাকল না। ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের ১২ আগস্ট প্রকাশিত স্মারক অনুযায়ী, প্রতিবেশী দেশে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে ২০১৮ সালের বিধিতে সংশোধন আনা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘পূর্ণ বা আংশিক সক্ষমতায় ব্যবহার না হলে ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে বিদ্যুৎ বিক্রির সুবিধার্থে ভারতীয় গ্রিডে এ ধরনের উৎপাদন কেন্দ্রের সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দিতে পারে।’ স্মারকে আরও বলা হয়েছে, অর্থ প্রদানে বিলম্ব হলে স্থানীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।