সারা দেশের ৬৩৯টি থানার সবকটির অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে মেট্রোপলিটনের ১১০টি থানা এবং জেলার ৫২৯টি থানা রয়েছে। এ ছাড়া রেলওয়ে পুলিশের ২৪টি থানার অপারেশনাল কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশে বিভিন্ন থানায় অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় থানা ও ফাঁড়ি থেকে প্রচুর অস্ত্র লুট হয়। লুট হওয়া ৫৩৪টি অস্ত্র এবং ১০ হাজার ২১৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩৫৯টি টিয়ার গ্যাস সেল এবং ১৪২টি সাউন্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল পুলিশ সদর থেকে পাঠানো পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার চলছে। কারও কাছে অবৈধ অস্ত্র থাকলে নিকটস্থ থানায় জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় ৪৫০টির বেশি থানা ও ৭০টির বেশি পুলিশ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলা, ভাঙচুর, হত্যাকান্ড, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মাধ্যমে চালানো হয় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ। হত্যা করা হয় পুলিশ ও র্যাবের ৪২ সদস্যকে। অনেক জায়গায় নির্মমভাবে পেটানোর পর ঝুঁলিয়ে রাখা হয় পুলিশ সদস্যদের। বহু আহত হয়েছে। এতে করে পুলিশ কর্মবিরতিতে গেলে ভেঙে পড়ে সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা। পুলিশ সদস্যরা থানায় আসতে সাহস পাননি। পরে পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনা পাহারা দেওয়ার জন্য আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়। পাড়া মহল্লায় শুরু হয় গণডাকাতি, চুরি, ছিনতাই ও দখল।
পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মবিরতি ভেঙে আবারও কাজে ফিরে পুলিশ। জিডি ও লিখিত অভিযোগ নেওয়া গেলেও বেশির ভাগ থানা মামলা রেকর্ড করতে পারছে না। গতকাল থেকে সব থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে থানার কার্যক্রম শুরু হলেও ক্ষতিগ্রস্ত থানাগুলোকে ধ্বংসযজ্ঞ কাটিয়ে উঠে পূর্বের পরিস্থিতে ফিরতে আরও সময় লাগবে। থানার কার্যক্রম পুনরুদ্ধার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতিটি থানা এলাকায় নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠনের জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সব জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির প্রধান লক্ষ্য হবে আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো।