মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র দুই মাস বাকি। আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচন। এতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট, রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সূত্র : রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি।
নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি। দুই প্রতিদ্বিন্দ্বীর প্রতিদিনের কর্মযজ্ঞের ওপর নজর রাখছেন দেশটির ভোটারসহ গোটা বিশ্ব। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কমলা হ্যারিস। তবে এই সাক্ষাৎকারে তিনি অতিরিক্ত সাবধানী ছিলেন বলে তেমন একটা চমক সৃষ্টি করতে পারেননি।
অন্যদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজের লেখা বই ‘সেভ আমেরিকা’ প্রকাশ করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্যাম্প, যা আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম সম্প্রচারমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন
কমলা হ্যারিস। সিএনএনকে দেওয়া তাঁর সে সাক্ষাৎকারকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথম সাক্ষাৎকারে তাঁর ভূমিকা কেমন ছিল তা নিয়েও চলছে নানা বিশ্লেষণ। বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সাক্ষাৎকারের সূচনাপর্বটি শক্তিশালী ছিল না। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে প্রথম দিন কী করবেন- সে সম্পর্কে কথা বলতে কমলাকে হোঁচট খেতে হয়েছে। রানিং মেট টিম ওয়ালজকে সঙ্গে নিয়ে সাক্ষাৎকারে অংশ নেন কমলা। এ সময় তাকে শান্ত ও আত্মবিশ্বাসী বলে মনে হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় কমলা নিজের কোনো লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করেননি। কমলার প্রচারশিবির প্রায়ই একটা কথা বলে থাকে, তা হলো, ‘আমরা পেছনে ফিরছি না।’ সাক্ষাৎকারে কমলা বাইডেনের প্রতি তাঁর আনুগত্য দেখালেও বারবারই বলছিলেন, ‘গত দশকের পাতা ওলটানোর এটাই সময়।’ এরপর এটি ব্যাখ্যা করে কমলা বলেন, এক দশক বলতে তিনি এক দশকের তিক্ততা ও বিভক্তির কথা বলেছেন, বাইডেন-কমলা প্রশাসনের সাড়ে তিন বছরের শাসনব্যবস্থার কথা বলেননি। সাক্ষাৎকারে কমলা প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প সম্পর্কে বলেন, ‘ট্রাম্প সেই পুরনো, গৎবাঁধা কথাবার্তা বলছেন।’ এদিকে তাঁর এই সাক্ষাৎপর্বের পর নিজের প্রচারশিবির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘একঘেয়ে।’
ট্রাম্পের বই : ‘সেভ আমেরিকা’ নামে ট্রাম্পের নতুন বই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে হোয়াইট হাউসে জাকারবার্গের সঙ্গে বৈঠকের তারিখবিহীন একটি ছবিও বইটিতে আছে। ট্রাম্প সেখানে লিখেছেন, ‘আমার সঙ্গে দেখা করতে ওভাল অফিসে (যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির আনুষ্ঠানিক কাজের স্থান) আসেন। তিনি (জাকারবার্গ) তার খুব সুন্দর স্ত্রীকে নৈশভোজে নিয়ে আসতেন। যে কেউ যতটা সুন্দর হতে পারে, ততটা সুন্দর সাজতেন। সর্বদা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে সত্যিকারের চক্রান্তে লজ্জাজনক ‘লক বাক্স ইনস্টল’ করার ষড়যন্ত্র করতেন। ট্রাম্প বইটিতে সতর্ক করেছেন, ‘আমরা তাকে (জাকারবার্গ) নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এবার যদি তিনি অবৈধ কিছু করেন, তবে তাকে বাকি জীবন কারাগারে কাটাতে হবে।’ ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামনে নভেম্বরের ভোটে আবার এমনটি করার বিষয়েও বইটিতে সতর্ক করেছেন তিনি।
জর্জিয়ার রাবোন কাউন্টি হবে ভাগ্য বিধাতা : অঙ্গরাজ্য জর্জিয়া, সেখানে ১৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। এই ১৬টি ভোট কে পাবেন- তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে অঙ্গরাজ্যটির রবোন এলাকা। নির্বাচনে যে প্রার্থী ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে অন্তত ২৭০টি পাবেন, তিনিই বসবেন হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের গদিতে। ফলে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে রবোন কাউন্টির বাসিন্দাদের আলোচনায় নানা বিষয় স্থান করে নিয়েছে। অর্থনীতি, গর্ভপাত ও অভিবাসনের মধ্যে গুরুত্ব পাচ্ছে।