আশুলিয়া থানার সামনে গুলি করে হত্যার পর ছাত্র-জনতার লাশ গুনে গুনে ভ্যানে স্তূপ করা এবং পরে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকা আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন আশুলিয়া থানার এসআই আবুল হাসান ও এএসআই বিশ্বজিৎ।
এর আগে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের ভেস্ট পরা ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেনকে শনাক্ত করা হয়।
পৈশাচিক এ ঘটনার সময় ইউনিট কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মোদ্দাসের খান জ্যোতির ঘনিষ্ঠ বন্ধু পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ২৯ ব্যাচের কর্মকর্তা আবদুল্লাহিল কাফী এবং আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম সায়েদ। জানা গেছে, এদের মধ্যে সম্প্রতি এ এফ এম সায়েদকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বদলি করা হয়। ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর আত্মগোপনে চলে গেছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা। যে কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে আশুলিয়া থানার নিয়মিত কার্যক্রম।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ও পালিয়ে দেশ ছাড়ার পর ৫ আগস্ট বিকালে ছাত্র-জনতা বিজয় উল্লাস নিয়ে থানার দিকে আসে। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে নির্বিচার গুলি চালায় পুলিশ। ঘটে নির্মম গণহত্যা। এরপর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো পৈশাচিক কাজ করে তারা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে ভ্যানে লাশের স্তূপে থাকা ব্রাজিলের জার্সি দেখে স্বামী আবুল হোসেনকে শনাক্ত করেন গার্মেন্ট কর্মী লাকি আক্তার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক মিনিটি ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটি ব্যাটারিচালিত অটো ভ্যানের ওপর ছয় থেকে সাতজনের নিস্তেজ দেহ স্তূপ করে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা। সেই স্তূপের ওপর আরেকটি দেহ চ্যাংদোলা করে তুলছিলেন দুজন। তাদের মধ্যে ভিডিওতে পুলিশের হেলমেট ও ভেস্ট পরা একজনকে প্রথমে শনাক্ত করা হয়। ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেনকে দিয়েই মূলত ঘটনাস্থল শনাক্ত করা হয়। এরপর একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে সেই দিনে পুলিশের নির্মমতার নানা চিত্র। ওই গণহত্যার ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।